323676

বাইরে পাহারারত একদল সিংহ, ভেতরে ফুটফুটে সন্তান জন্ম দিলেন নারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এ যেন কোন সিনেমার দৃশ্য। অ্যাম্বুল্যান্সের বাইরে পাহারারত একদল সিংহ। আর ভিতরে নি’শ্চিন্তে ভূমিষ্ঠ হচ্ছে শিশু। পশুরাজ আর মানুষের সহাবস্থান। ভাবতেও অবাক লাগে। এমনই দৃশ্য বাস্তবের মাটিতে ধ’রা পড়ল। ঘটনাস্থল ভারতের গুজরাটের গীর অরণ্য।

বুধবার রাতে হঠাৎই প্রসব য’ন্ত্র’ণা শুরু হয় বছর তিরিশের আফসানা রফিকের। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ডাকা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। আফসানার গ্রাম ভাখা থেকে হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে যাত্রা শুরু হয় অন্তঃসত্ত্বার। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই য’ন্ত্র’ণা তী’ব্রতর হয়ে ওঠে। তখনও ৬ কিলোমিটার পথ অতি’ক্রম করা বাকি।

রসুলপুর পাটিয়া এলাকাতে আসতেই ব্রেক কষতে হয় অ্যাম্বুল্যান্স চালককে। কেন? রাতের অন্ধকারে পথ আ’টকে বসে রয়েছে একদল সিংহ! শিহরণ জাগানোর মতোই পরি’স্থিতি। বিশ্রামরত পশুরাজের দলকে দেখে ভালই বোঝা যাচ্ছে, অ্যাম্বুল্যান্সকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য সেখান থেকে উঠতে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয় তারা। এদিকে প্রসব যন্ত্র’ণায় ছ’টফট করছেন আফসানা। তাহলে উপায়? কীভাবে এগোনো যায়?

অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী জগদীশ মাকওয়ানা ঠিক করেন, আর বিলম্ব না করে সেখানেই প্রসব করাতে হবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। এক আশাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সফলভাবেই প্রসব করান তিনি। গভীর সিংহ গর্জনের মধ্যেই জন্ম নিল ফুটফুটে কন্যা সন্তান। গর্বের জন্মই বটে। মা ও সন্তান দু’জনই সুস্থ।

সেই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে জগদীপ বলেন, বাইরে একদল সিংহ বসে। মাঝেমধ্যে গর্জেও উঠছে তারা। বুক দুরুদুরু অবস্থা। কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে বনদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে ফোন করেন তিনি। কর্মকর্তা জানান, সিংহরা নিজে থেকে পথ না ছাড়লে তাঁরা যেন তাদের সরানোর চেষ্টা না করেন। অ্যাম্বুল্যান্স যেন সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে।

অগ’ত্যা ফোনে ডাক্তারের পরামর্শ মতোই অস্ত্রো’প’চার শুরু করেন জগদীপ। বাইরে সিংহের দল আর ভিতরে শিশুর ডেলিভারির প্রক্রিয়া। অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। স্বস্তি মিলল শিশু ভূমিষ্ঠ হতেই। তবে বাচ্চাটি জন্মানোর পরও ২০-২৫ মিনিটে সেখানেই আ’টকে ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। সিংহবাহিনী পথ ছাড়লে অবশেষে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেয় গাড়ি। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

ad

পাঠকের মতামত