307525

৩৩ সেকেন্ডের মিশনে সবকিছু লন্ডভন্ড

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে কারা হামলা চালিয়েছে সেটি পুলিশের কাছে স্পষ্ট না হলেও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পড়েছে হামলার সেই চিত্র। মুখে মাফলার বেঁধে হামলা চালানো ১০/১২ জনের ওই দলের সবাই যুবক। মাত্র ৩৩ সেকেন্ডেই নিজেদের মিশন অনুযায়ী অনুষ্ঠানস্থল লন্ডভন্ড করে দেয় তারা।

ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পরা ওই হামলার ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৮টা ৫৪ মিনিট ৭ সেকেন্ড থেকে ৪০ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে ওই তাণ্ডব। মাত্র ৩৩ সেকেন্ডে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয় দুর্বৃত্তরা। সর্বপ্রথম কালো শার্ট-প্যান্ট পরা এক যুবক জেলা পরিষদ চত্বরে লাগানো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছবিযুক্ত ব্যানার টেনে-ছিঁড়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর একে একে বাকি হামলাকারীরা ঢোকেন অনুষ্ঠানস্থলে। তারা সেখানে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলে আগত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রাখা চেয়ার ভাঙচুর করে মাটিতে আছড়ে ফেলে দেন। হামলাকারীদের মধ্যে এক যুবক চেয়ার দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত ব্যানারে আঘাত করে ছিঁড়ে ফেলেন। হামলা শেষে ফেরার পথে ভুল করে এক হামলাকারী আরেক হামলাকারীর দিকে চেয়ার ছুড়ে মারার দৃশ্যও ধরা পড়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায়।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জেলা পরিষদ চত্বরে আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা পরিষদ। বেলা ১১টায় ওই অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। হামলার কারণে কিছুটা বিলম্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

হামলার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে দায়ী করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বলেন, ছাত্রলীগ নামধারীরা এ হামলা চালিয়েছে। যারা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে তারা প্রকৃত রাজাকার। আমরা এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেব।

তবে হামলার ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, আমরা ওই অনুষ্ঠান এবং হামলা সম্পর্কে কিছুই জানি না। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমাদের কোনো নেতাকর্মী হামলা করেছে তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, এটি নিন্দনীয় ঘটনা। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ বা অঙ্গ সংগঠনের কেউ জড়িত নয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান বলেন, কারা হামলা চালিয়েছে সেটি এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আমরা হামলার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের শনাক্তকরণের চেষ্টা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ad

পাঠকের মতামত