302056

পদ্মার পানির সঙ্গে বাড়ছে বিপদের শঙ্কাও

ভারত হঠাৎ করেই ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়ায় বাংলাদেশে পদ্মা নদী ও এর বিভিন্ন শাখা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির আশংকা। পদ্মায় পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রাজশাহী, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। বসত বাড়িতে পানি ওঠায় অনেকে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে উঁচুস্থানে ঠাঁই নিয়েছেন।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম জহুরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার (৩রা অক্টোবর) সকালে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মায় পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির উচ্চতা রয়েছে ১৪ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার। বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার।

এ কারণে পাবনার ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা অঞ্চলে নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যায় রূপ নিয়েছে। তলিয়ে গেছে চরে আবাদকৃত শতশত বিঘার ফসল। ফারাক্কার কুপ্রভাবে যেমন শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায় পদ্মাসহ শাখা নদীগুলো, তেমনি এই সময় হঠাৎ করে বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় প্রবল গতিতে পদ্মায় পানি বাড়ছে। স্রোতের তোড়ে ঈশ্বরদী উপজেলার নদী তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকার এক হাজার হেক্টর জমির সবজি-ফসল ও নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঈশ্বরদীর সাঁড়া, পাকশী ও লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের শত পরিবার ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

পাবনা পাউবোর হাইড্রোলজি বিভাগের উত্তরাঞ্চলীয় নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম জহুরুল হকের জানিয়েছেন, গত ৭ দিনে পানির উচ্চতা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। পদ্মার বিপৎসীমা নির্ধারণ আছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেখানে বৃহস্পতিবার (৩রা অক্টোবর) সকালে পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ছিল ১৪ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার বেশি। পানি পানি বৃদ্ধি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, অনেক বছর ধরে আষাঢ়-ভাদ্র মাসে বন্যা না হওয়ায় তারা অনেকটা নিশ্চিন্তে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে ২৫ সেপ্টেম্বর এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে খেত তলিয়ে যেতে থাকে। গত ছয় দিনে পানি ঘরের আঙিনায়ও ঢুকে পড়েছে। বাড়ির ভেতরে ও আঙিনায় পানি প্রবেশ করায় পোকামাকড় ও সাপের উপদ্রব বেড়েছে।

পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আগে থেকেই জেলা প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নদীরপাড় এলাকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যখন যেভাবে প্রয়োজন জেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিক সেভাবে ব্যবস্থা নেবে।

ad

পাঠকের মতামত