191090

প্রশাসন জানে না, রোহিঙ্গাদের বিয়ে হচ্ছে গোপনে

বাংলাদেশের এক যুবক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করার কারণে হয়রানি ও গ্রেপ্তার এড়াতে আদালতে করা একটি রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু বিবিসি বাংলাকে বলেছেন রিট আবেদনকারি পক্ষ মূলত দুই ধরনের অপরাধ করেছেন, একটি হল রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করা এবং ওই নারীকে বিশেষ এলাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া। আবার সে নিবন্ধন পেতে সরকারের নির্দেশনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করায় আদালতের সময়ও নষ্ট হয়েছে। ফলে খরচ বাবদ রিটকারিকে এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে রোহিঙ্গাদের বিয়ের ঘটনা ঠিক কতটা ঘটে তা জানতে চাইলে কক্সবাজারের সাংবাদিক এম আমানুল্লাহ আমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা ঢালাওভাবে আসছে। তখন অনেকে আশ্রয় দেয়ার নামে বা বিভিন্ন লোভের কারণে অনেকে বিয়ে করেছে। তবে তেমন একটা বেশি বিয়ে হয়নি। বিষয়টা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়রা বাধা দিয়েছে। সেসময় বাধা প্রদান করার পর থেকে এটা একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হলেও প্রশাসনকে না জানিয়ে গোপনে অনেকে বিয়ে করছে।

শুরুর দিকে অনেক বেশি বিয়ে হত কিন্তু সেটা কিভাবে হত?

জবাবে আমান বলেন, ওপাড়ের রোহিঙ্গাদের সাথে এপাড়ের রোহিঙ্গাদের পূর্বের কিছু আত্মীয়তা ছিল। ওরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীদের আশ্রয় প্রদান করে পরে তাদেরকে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের ডকুমেন্ট হয়নি, তারা বিয়ের নিবন্ধনও করতো না।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখানকার স্থানীয়দের বিয়ে কবে থেকে কমতে শুরু করল?

জবাবে আমান বলেন, মূলত রোহিঙ্গারা আসা শুরু করছে আগষ্ট মাসে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে প্রকাশ্যে যে বিয়েটা হত সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মাঝে মাঝে এরকম বিয়ে এখনো হচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ দেখা যায় আশেপাশে বা আমার বাড়িতে আসলে আমি বিভিন্ন লোভে বা ওদেরকে আশ্রয় দেয়ার নামে কারো একটা বউ আছে, তার সাথে আমরা আবারও বিয়ে দিয়ে দিচ্ছি।

এ ধরণের বিয়ের ক্ষেত্রে আইনের তোয়াক্কা মানুষ কতটুকু করে?

জবাবে আমান বলেন, আইনগতভাবে মানুষজন সচেতন নয়। দেশের আইনে বিদেশিরা যারা আসবে তারা নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে যেতে পারবে না বা ওদেরকে কেউ বিয়ে করতে পারবে না, এ সম্পর্কে আমাদের দেশে যারা একের অধিক বিয়ে করে বা অশিক্ষিত মানুষ এদের কিন্তু এ বিষয়ে ধারণা নেই। তাছাড়া মিয়ানমার থেকে যারা আসে তারা চায় বাঙ্গালীদের সাথে সম্পর্ক করতে, তাই তাদের একের অধিক বিয়ে করতে কোন সমস্যা নাই। সম্পর্ক ভালো করার লক্ষ্যে তারা ১৪ বা ১৫ বছরের মেয়ের সাথে ৪০ বা ৫০ বছরের বয়স্ক লোকের বিয়ে দেয়।

এ ধরণের বিয়ের ক্ষেত্রে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া কী?

জবাবে আমান বলেন, এ ধরণের বিয়ে বা একের অধিক বিয়ে যারা করছে এদের ক্ষেত্রে প্রশাসনের ওপর তেমন একটা প্রভাব পড়ে না। প্রশাসন যদি বাধা দেয় তাহলে তারা ওই স্থান থেকে পালিয়ে অন্য স্থানে গিয়ে ঠিকই বিয়ে করছে। আমাদের সময়.কম

ad

পাঠকের মতামত