363565

আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল, মুখ খুললেন মরিয়মের মা

নিউজ ডেস্ক।। খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে মুখ খুলেলেন ২৯ দিন নিখোঁজ থাকার পর ফরিদপুর থেকে উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম। উদ্ধারের ১৬ ঘণ্টা পর আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে সন্তানের মুখোমুখি করার পর তিনি মুখ খোলেন।

তার দাবি, গত ২৯ আগস্ট রাতে পানি আনতে গিয়ে তিনি অপহৃত হন। চার জন তার নাকে রুমাল ধরেন। এরপর আর তার কিছু মনে নেই। পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান দুপুর আড়াইটার দিকে এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘ গতকাল শনিবার ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর থেকে কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। আজ দুপুর ১টার দিকে মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ তাকে চার মেয়েকে মুখোমুখি আনা হয়। এ সময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তিনি অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।’

কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা বলতে থাকেন, ‘আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না। আমাদের জমি দরকার নেই। আমাদের মাকে দরকার, তোমাকে দরকার।’

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘অপহরণের পর অজ্ঞাতস্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন রহিমা বেগম। জমি নিয়ে বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তাকে একহাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন।’

রহিমা বেগমের দাবি, তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর হয়ে পূর্ব পরিচিত ভাড়াটিয়া ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তার কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।’

এর আগে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধারের পর রহিমা বেগম (৫৫) ও আরও দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর কুদ্দুসের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন রহিমা বেগম। কুদ্দুস এক সময় খুলনার জুট মিলে চাকরি করতেন ও রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। সে সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘসময় পরও তার খোঁজ না পাওয়ায় ঘটনার দিন রাত সোয়া ২টায় দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন তার মেয়ে আদুরী।

এরপর পুলিশ ও র‌্যাব ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়।

এদিকে, গত শুক্রবার দুপুরে রহিমা বেগমের মেয়েরা ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত মহিলার লাশকে ‘মায়ের লাশ’ দাবি করলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। উদ্ধার হওয়া লাশের পরনের কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে নিজের মায়ের লাশ বলে জানায় রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান। তবে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ অর্ধগলিত ছিল দাবি করে লাশের ডিএনএ টেস্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করেন।

 

ad

পাঠকের মতামত