348935

চাল নিয়ে বেইজিংয়ের নতুন চালবাজি! চিন্তায় ভারত

বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রফতানিকারক দেশ ভারত। এবং এই মুহূর্তে চাল আমদানির ক্ষেত্রে দুনিয়ায় শীর্ষে রয়েছে চীন। ভারত ও চীনের মধ্যকার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (LAC) নিয়ে সংঘাত চলার আবহেই এবার চাল নিয়ে নয়া চাল বেইজিং সরকারের। তিন দশক পর প্রথম বার ভারত থেকে চাল কিনবে চীন। কয়েকটি ভারতীয় ব্যবসায়ী সংস্থাকে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১ লাখ টন চাল রফতানির ক্রয়াদেশ দেয়া হয়েছে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর।

ভারতের সরকারি সূত্রের খবর, টন প্রতি ৩০০ ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২২,১২৫ রুপি দরে চীন চাল আমদানি করবে। ভারতীয় চাল রফতানিকারকদের সংগঠন ‘রাইস এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি বি ভি কৃষ্ণ রাও বুধবার বলেছেন, ‘এই প্রথম চীন আমাদের থেকে চাল আমদানি করতে চলেছে। আশা করি পরবর্তী অর্থবর্ষে চীনে চাল রফতানির পরিমাণ আরো বাড়বে।’

বেইজিং সাধারণত প্রতি বছরই ৪০ লাখ টন চাল আমদানি করে। তবে এর আগে ভারত থেকে চাল কেনার ক্ষেত্রে বরাবরই অনীহা দেখিয়েছে শি জিংপিংয়ের সরকার। তাদের দাবি ছিল, ভারতের চেয়ে অনেক কম দামে মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও তাইল্যান্ড থেকে চীন চাল কিনতে পারে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের কালবেলায় সেই দেশগুলোতে উৎপাদন এতটাই কম হয়েছে যে, এত পরিমাণ চাল রফতানি সম্ভব নয়। তাই দেশের আভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতেই ভারতের থেকে চান কিনতে চলেছে চীন।

চলতি বছর মে মাস থেকেই পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ‘সম্মুখ সমরে’ ভারত ও চীন। জুন মাসে সংঘাত চরমে পৌঁছয়। ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনা বাহিনীর মধ্য সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে এক কর্নেল-সহ ২০ জন জওয়ান নিহত হন। উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে দফায় দফায় আলোচনা চালাচ্ছে দু’দেশ। কিন্তু সমাধানসূত্র এখনো অধরা। এই পরিস্থিতিতে চীনা সেনার পাশাপাশি লাদাখে ‘শীত-যুদ্ধ’-র জন্যেও প্রস্তুত চীনা ও ভারতীয় সেনাবাহিনী।

পূর্ব লাদাখের হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় জওয়ানদের থাকার জন্য অত্যাধুনিক তাঁবুর বন্দোবস্ত করেছে ভারতীয় সেনা। বিশেষ এই তাঁবুতে ২৪ ঘণ্টা গরম পানি, বিদ্যুৎ-সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধে রয়েছে। শীতের লাদাখে মোতায়েন জওয়ানদের কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করতে, ভারতীয় সেনার তরফে পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেনার বিবৃতিতে আরো জানানো হয়েছে, ‘লাদাখে মোতায়েন জওয়ানদের জন্য স্মার্ট তাঁবু তৈরি করা হয়েছে। তাঁবুর ভিতরেই বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে তাঁবু গরম রাখার ব্যবস্থাও। এই তাঁবুগুলোতে জওয়ানদের স্বাস্থ্য ও স্বচ্ছতার দিকেও নজর দেয়া হয়েছে।’

এই পরিস্থিতিতে চাল কেনা নিয়ে চিনের এই চাল নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করছে কূটনৈতিকমহলের একাংশ। কয়েক শ’ চিনা মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন চীনা পণ্যের আমদানিতেও ভারত সরকারি নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। সেখানে ভারত থেকে এবার চাল কিনে নতুন কোনো বার্তা দিয়ে চাইছে কিনা শি জিংপিংয়ের সরকার, তা অবশ্য এখনও ধোঁয়াশা।

সূত্র : এই সময়

ad

পাঠকের মতামত