334125

যুবকের প্যান্টের মধ্যে ৭ ঘণ্টা গোখরা সাপ! (ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক।। দিনের কাজ শেষে রাতের খাবার খেয়ে শুয়েও পড়েছিলেন। এরপরই একটি বিষধর গোখরো সাপ ঢুকে পড়ে লাভকেশ কুমার নামে ওই যুবকের প্যান্টের ভেতর। এর ৭ ঘণ্টা পর সাপটিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। সৌভাগ্যবশত: সাপটি লাভকেশের কোনো ক্ষতি করেনি।

সম্প্রতি এমন এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের সিকন্দরপুর গ্রামে। প্যান্ট কেটে সাপটিকে বের করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে।

ভারতীয় বিভিন্ন মাধ্যমের খবরে জানা, সম্প্রতি এক দল শ্রমিক বিদ্যুতের খাম্বা ও সঞ্চালন লাইন (তার) টানার কাজ কাজ করতে গিয়েছিলেন ওই গ্রামে। সারাদিন কাজ করে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। মধ্যরাতে ঘুমের ঘোরে লাভকেশ টের পান তার প্যান্টের ভেতরে কিছু একটা ঢুকেছে। পরে বুঝতে পারেন এই কিছু একটি ‘সাপ’।

এরপর আশপাশের সকলের পরামর্শে খুব সাবধানে ওই বাড়ির বারান্দার একটি খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। খবর দেয়া সাপুড়েকে। কিন্তু ভোর নাগাদ সাপুড়ে আসতে আসতে পার হয়ে যায় ৭ ঘণ্টা। সাপুড়ে এসে সাবধানে লাভকেশের প্যান্ট কেটে বের করেন সাপটিকে। হয়তো লাভকেশ একবারের জন্য ভাবেননি তার প্যান্টের ভেতর যে সাপ ছিল তা মারাত্মক বিষাপ্ত ‘গোখরো’ সাপ। খবর পেয়ে পুলিশ ও গ্রামবাসীরাও ভিড় জমায় ওই বাড়িতে। তবে, সাপটি তার প্যান্টের ভেতর ছিল শান্তভাবে। এমনকি একটি কামড় পর্যন্ত দেয়নি।

গোখরো সাপ: ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম বিষধর সাপ। ইংরেজি নাম Indian cobra। spectacled cobra, Asian cobra বা Binocellate cobra নামেও ডাকা হয়। বৈজ্ঞানিক নাম Naja naja। বাংলায় এই সাপটিকে খড়মপায়া বা খইয়া গোখরা নামেও ডাকা হয়। গোখরোর ফণার পিছনে গরুর ক্ষুর বা পুরোনো দিনের ডাঁটিছাড়া জোড়া-চোখো চশমার মত দাগ থাকে তার থেকেই বাংলা নাম গোক্ষুর বা গোখরো হয়েছে বলে ধারনা করা হয়।

ছোট সাপের রং স্থিত থাকে। গায়ে হলুদ, বাদামি, ছাই বা কাল ধরনের রংয়ের সঙ্গে ক্রসব্যান্ড দেখা যায়। ফণার দুই ধারে নিচের দিকে কাল ছোপ দেখতে পাওয়া যায় এবং একটি বা দুটি ক্রস আকারের রেখা কালো ছোপের পেছন থেকে পেটের দিকে নামে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে গায়ের রং ফিকে হতে শুরু করে। এর দুটি সরু, লম্বা বিষ দাঁত আছে। সবচেয়ে বড় বিষ দাঁতের রেকর্ড হল ৬.৭৮ মিমি (০.৬৭৮ সেমি)। বিষদাঁতগুলো বিষছুঁড়ে মারার জন্য কিছুটা উপযুক্ত। পূর্ণ বয়স্ক গোখরা লম্বায় প্রায় ২.৩ মি (৭.৫ ফুট) লম্বা হয়।

গোক্ষুর বা গোখরা পাওয়া যায় ভারতের পশ্চিম থেকে চীন, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়াতে। মালয় দ্বীপপুঞ্জ, বাংলাদেশ, ভুটান, মিয়ানমার, লাওস, নেপাল ও থাইল্যান্ড এদের আদি নিবাস।

এরা নিশাচর। মানুষের বসতবাড়ির আশেপাশে, চাষের জমি, বনাঞ্চল বা ধানক্ষেতের আশেপাশের ইদুরের গর্তে থাকতে ভালবাসে। বিরক্ত হলে পালাতে পছন্দ করে। কিন্তু যদি তার কাছে কাউকে প্রাণ সংশয়কারী মনে হয় তাহলে ফণা তুলে হিস হিস শব্দ করে। আত্মরক্ষার্থে কামড়ও দেয়। কোনো কোনো সাপ বিষ ছুড়েও মারতে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (IUCN) এই সাপটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এই সাপটিকে কেউটে সাপও বলা হয়। কেউটে শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘কালকূট’ থেকে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন:

ad

পাঠকের মতামত