332363

কে এই খু’নি হাসপিল, কীভাবে পরিচয় ফাহিমের সঙ্গে

প্রবাস ডেস্ক।। রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহর এক লাখ ডলার চু’রি করেও ক্ষ’মা পেয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত সহকারী টেরেস ডেভোন হাসপিল। অথচ তিনিই ফাহিমকে খু’ন করেছেন বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি)।

গতকাল শুক্রবার এনওয়াইপিডি’র গো’য়েন্দা বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসন এ ধারণার কথা জানিয়ে বলেন, ‘এক কথায়, অন্য কেউ এ ঘটনায় জ’ড়িত কি না তার কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। আর যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজে টেরেস ডেভোন হাসপিলকে দেখা গেছে, আমরা তাকে প্রাথমিকভাবে খু’নি হিসেবে ধরে নিয়েছি।’

আজ শনিবার টেরেস ডেভোন হাসপিলকে নিউইয়র্কের আ’দালতে তোলা হয়। তার বি’রুদ্ধে ‘সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারে’র অ’ভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

কে এই টেরেস ডেভোন হাসপিল : যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো বলছে, টেরেস ডেভোন হাসপিল নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি লং আইসল্যান্ড হাইস্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে ডেইলি নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি তিনি।

কীভাবে ফাহিমের সঙ্গে পরিচয় : ফাহিমের সঙ্গে তিনি কাজ করার সুযোগ পান একটি প্রতিযোগিতা থেকে। ২০০৯ সালে প্র্যাঙ্ক ডায়াল নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন ফাহিম। সেটিতে কাজ করার জন্য ওয়েব ডিজাইনের প্রতিযোগিতা হয়। সেটিতে টিকে গিয়ে ফাহিমের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান। হাসপিলকে অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিতে চিফ অব স্টাফ হিসেবেও যোগ দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি।

তবে পুলিশ বলছে, হাসপিল প্র’তারক স্বভাবের ব্যক্তি। তিনি ফাহিমের ১ লাখ ডলার চু’রি করেছেন। তবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ওই ব্যক্তি হাসপিলের কাছ থেকে আরও কিছু অর্থ পেতেন। গো’য়েন্দা প্রধান রডনি হ্যারিসন বলেন, ‘চু’রি করা অর্থের পাশাপাশি হাসপিল আরও বড় অঙ্কের অর্থ ভুক্তভোগী থেকে ধার নিয়েছিলেন বলে আমরা ধারণা করছি।’

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে নিজের বিলাশবহুল ফ্লাটে খুন হন ফাহিম। পরদিন (মঙ্গলবার) ফের তার ঘরে গিয়ে লা’শ গুমের চেষ্টা করেন হাসপিল। কিন্তু ফাহিমের বোন চলে আসায় তা আর করতে পারেননি তিনি।

আ’দালতে কী হয়েছে : নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় ১৭ জুলাই মধ্যরাতের কিছু পরে টেরেস ডেভোন হাসপিলকে ম্যানহাটনের ফেডারেল আ’দালতে হাজির করা হয়। ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে তাকে আ’দালতে উপস্থাপন করেন ম্যানহাটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড। আদালতকে তিনি বলেন, হোমডিপো নামে একটি দোকান থেকে ফাহিমকে হ’ত্যায় একটি ইলেকট্রিক করাত কেনেন হাসপিল। এ ছাড়া ফাহিম সালেহর অ্যাপার্টমেন্টে ধোয়ামোছার সরঞ্জামাদি পাওয়া গেছে।

সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যাওয়া সন্দেহভাজন খুনির পোশাক টাইরেস হ্যাসপিলের ব্রুকলিনের বাড়িতে পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নিউইয়র্ক পুলিশের ত’দন্ত দল হ্যাসপিলকে প্রযুক্তির মাধ্যমে শ’নাক্ত করতে পেরেছে। ফাহিম সালেহর হ’ত্যার সঙ্গে হাসপিলের জ’ড়িত থাকার জোরাল প্রমাণ আছে। অন্তত দুজন শ’নাক্তকারী অ’পরাধ সং’ঘটনের আগে ও পরের সার্ভিল্যান্স ভিডিও থেকে তাকে শ’নাক্ত করেছেন।

লিন্ডা ফোর্ড আদা’লতকে আরও বলেন, টাইরেস হাসপিল তরুণ প্রযুক্তিবিদ ফাহিম সালেহর অন্তত ১ লাখ মার্কিন ডলার ‘চু’রি করেছিলেন। তার বি’রুদ্ধে পুলিশ বা আ’ইনি আশ্রয়ে না গিয়ে ফাহিম তাকে কিস্তিতে অর্থ ফেরত দেওয়ার সুবিধা করে দিয়েছেন। আমরা নিশ্চিত নই, তবে ধারণা করা হচ্ছে, অর্থের লেনদেন এবং ব্যক্তিগত বিষয়ই এই হ’ত্যাকা’ণ্ডের কারণ। হ্যাসপিল কোনো অর্থ ফেরত দিয়েছেন কিনা, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অর্থ ফেরত না দিতে চেয়ে পুলিশে রিপোর্ট হওয়ার ভ’য়ে হাসপিল খু’ন করেছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আ’দালতের বি’চারক জোনাথন সভেটকি জামিনের সুবিধা ছাড়াই হাসপিলকে আ’টক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তার বি’রুদ্ধে দ্বিতীয় মাত্রার খু’নের যে অ’ভিযোগ আনা হয়েছে তাতে করে হাসপিল ১৫ থেকে পঁচির বছরের কা’রাদ’ণ্ডের সাজা পেতে পারেন। আগামী ১৭ আগস্ট তাকে আবার আ’দালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন বি’চারক। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

ad

পাঠকের মতামত