330515

ফ্লাইওভার কি এসবেরই ‘হট স্পট’?

ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলো অ’পরাধীদের জন্য যেন এক নি’রাপদ ‘হট স্পট’। দিনের বেলায়ও ফ্লাইওভারগুলোতে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। ছিনতাই, মাদক কেনা-বেচা, মা’দক সেবনসহ উঠতি বয়সী তরুণ বাইক রাইডারদের কাছে ফ্লাইওভারগুলো ‘খোলা মাঠ’।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ফ্লাইওভারগুলোতে সিসি ক্যামেরা, পুলিশের নজরদারী এবং পর্যাপ্ত লাইট না থাকার কারণে এসব অ’পকর্ম ঘটছে।

ছিনতাইকারীরা ফ্লাইওভারগুলোতে ছি’নতাই করে পালিয়ে যায় নির্বিঘ্নে। অনেক সময় ঘটছে খু’নের ঘটনাও। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি মগবাজার ফ্লাইওভারের উপর সোনারগাঁও প্রান্ত থেকে বেসরকারি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ছাত্র মিজানুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে ৩ জানুয়ারি কুড়িল বিশ্বরোড সংলগ্ন ফ্লাইওভারে মরদেহ পাওয়া যায় মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তির। ৩১ ডিসেম্বর খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে পাওয়া যায় অজ্ঞাত আরেক জনের লা’শ। তারও আগে গত ১০ ডিসেম্বর আক্তার হোসেন নামে এক স্বর্ণকারের মরদেহ পাওয়া যায় কুড়িল ফ্লাইওভারে।

ছাত্র মিজানুর রহমানের ম’রদেহের ‘তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ গ্রে’ফতার করে নুরুল ইসলামসহ তিনজনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ফ্লাইওভারকেন্দ্রিক ছিনতাই চ’ক্রের ভ’য়ানক সব তথ্য।

তারা পুলিশকে জানায়, গ্রে’ফতারের আগ পর্যন্ত তাদের একাধিক গ্রুপ ৬শ’ এরও বেশি ছিনতাই করেছে। যার অনেকগুলোই ফ্লাইওভারে।

শুধু ছিনতাই নয় ফ্লাইওভারগুলোতে অহরহ চলছে নানা ধরনের অসামাজিক কাজ। যা বি’ব্রতকর অবস্থায় ফেলছে যাতায়াতকারীদের। মগবাজার, খিলগাঁও, বনানী, গুলিস্তানসহ অধিকাংশ ফ্লাইওভারে প্রায়ই চোখে পড়ে ছেলে-মেয়েদের মোটরসাইকেল কিংবা গাড়ি থামিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা। আবার মা’দক সেবনের জন্যেও মা’দকসেবীরা নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিচ্ছে এসব ফ্লাইওভারগুলোকে।

অন্যদিকে, উঠতি বয়সী তরুণরা ফ্লাইওভারগুলোকে বেছে নিচ্ছে মোটরসাইকেল কসরত (স্টান্ট) করতে। আর তা করতে গিয়ে পড়ছে দু’র্ঘটনায়। গত বছর ৫ এপ্রিল খিলগাঁও ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল দু’র্ঘটনায় নি’হত হয় নবম শ্রেণির ছাত্র নোমান ও কলেজছাত্র তুহিন। একই বছরের ৬ জুন মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল দু’র্ঘট’নায় নি’হত হন কলেজছাত্র ইমন। একইদিন একই স্থানে আরেকটি মোটরসাইকেল দু’র্ঘটনায় নি’হত হন রিয়াজ আহমেদ কাওসার নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্র। এ ঘটনায় আরেক তরুণ আ’হত হন। ৪ জুলাই এই ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল দু’র্ঘটনায় মা’রা যান রবিউল ইসলাম(৩২) নামে এক দোকান কর্মচারী।

একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি মোসাদ্দেক আলীকে কাজের প্রয়োজনে প্রতিদিনই ছুঁটতে হয় রাজধানীর নানা প্রান্তে। তিনি বলেন, খিলগাঁও, মেয়র হানিফ আর মগবাজার ফ্লাইওভারে অ’সামাজিক কাজগুলো বেশি চোখে পড়েছে তার।

‘অনেক সময় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসব ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াতের সময় ভয়ে থাকি, কখন না আবার এরকম কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে যেতে হয়’ বলেন তিনি।

শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলই নয় এর চাইতেও অনেক খারাপ দৃশ্য এসব ফ্লাইওভারে দেখা যায় বলে জানান একাধিক পত্যক্ষদর্শী।

এ প্রসঙ্গে ডিএমপি’র ওয়ারী ডিভিশনের এডিসি (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) দীল মোহামস্মদ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, করোনাকালীন সময়ে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি আ’ইনশৃ’ঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ তৎপর। হানিফ ফ্লাইওভারও নজরদারীর বাইরে নয়। সেখানে পেট্রোলিং বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে। মানুষের জান-মা’লের ক্ষ’তিরোধে যা যা করার প্রয়োজন সবকিছুই করবো। সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

ad

পাঠকের মতামত