329349

পুলিশ কনস্টেবল স্বামীর হাতে ব’র্বর নি’র্যাতনের শি’কার হয়ে মৃ’ত্যুর কাছাকাছি ব্র্যাক কর্মী ইয়াছমিন

নিউজ ডেস্ক।। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় পুলিশ কনস্টেবল স্বামীর হাতে ব’র্বর নি’র্যাতনের শি’কার হয়ে স্ত্রী ব্র্যাক কর্মচারী ইয়াছমিন আক্তার এখন মৃ’ত্যু পথযাত্রী।

পুলিশ কনস্টেবল প্রকাশ প্রেমানন্দ ওরফে শোভন আহমেদ তার স্ত্রী ইয়াছমিনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আ’গুন ধরিয়ে দিয়ে হ’ত্যা’র চেষ্টা করেছেন বলে অ’ভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতের এ ঘটনার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা ব্র্যাকের ব্যবস্থাপনায় মু’মূর্ষু অবস্থায় ইয়াছমিন আক্তারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ ও ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ।

পুলিশ ও ইয়াছমিন আক্তারের স্বজনরা জানান, পুলিশ ক’নস্টেবল প্রকাশ প্রেমানন্দ বেশ কয়েক বছর আগে নেত্রকোণা সদর উপজেলার নবাব আলীর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তারকে বিয়ে করে মুসলিম হন। বিয়ে নিবন্ধন সূত্রে প্রকাশ প্রেমানন্দ তার নাম রাখেন শোভন আহমেদ। প্রকাশ প্রেমানন্দ বর্তমানে শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত। তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার দেওয়ানগঞ্জ ব্র্যাক অফিসে কর্মসূচি সংগঠক পদে চাকরি করেন। কয়েক বছর ধরে এই দম্পতি দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার বাজারিপাড়া এলাকায় জনৈক আবুল কালাম আজাদের বাসায় ভাড়া থাকেন। ইয়াছমিন আক্তারের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের সংসারে দশ বছর বয়সের এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই পুলিশ কনস্টেবল প্রকাশ প্রেমানন্দ তার স্ত্রীকে নি’র্যাতন করতেন এবং এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

দেওয়ানগঞ্জের ওই বাসায় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রকাশ প্রেমানন্দ হত্যার উদ্দেশে তার দশ বছর বয়সের মেয়ের সামনেই স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় ইয়াছমিনের চিৎকারে প্রতিবেশী কয়েকটি বাসার লোকজন সেখানে গিয়ে শরীরে পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে তাকে উদ্ধার করেন এবং তার স্বামীকে আ’টক করে দেওয়ানগঞ্জ থানায় জানান। পরে পুলিশ দ্রুত ওই বাসায় গিয়ে প্রকাশ তাকে আ’টক করে থানায় নিয়ে যায়।

খবর পেয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ব্র্যাক অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লোকজন ওই বাসায় ছুটে যান। পরে রাতেই ব্র্যাকের উদ্যোগে মু’মূর্ষু অবস্থায় ইয়াছমিন আক্তারকে জরুরি উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

ব্র্যাকের জামালপুর জেলা সমন্বয়ক মো. মুনির হোসেন খান জানান, শরীরে পেট্রল ঢেলে আ’গুন ধরিয়ে দেওয়ায় ইয়াছমিন আক্তারের মুখমণ্ডল, হাত-পা, বুক, পেটসহ শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পু’ড়ে মা’রাত্মকভাবে ঝ’লসে গেছে। খবর পেয়ে রাতেই দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে মু’মুর্ষূ অবস্থায় ইয়াছমিন আক্তারকে প্রথমে জামালপুর সদর হাসপাতালে, এরপর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখান থেকে তাকে আজ বুধবার ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

ব্র্যাক সমন্বয়ক মো. মুনির হোসেন খান ঢাকায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি ইয়াছমিন আক্তারের সাথে থাকা তার ছোট বোন আসমা আক্তার সেতুর উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, বুধবার রাত আটটার পর থেকে ইয়াছমিন আক্তারের শারীরিক অবস্থা খুবই স’ঙ্কটাপ’ন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি কথাও বলতে পারছেন না। ওই বার্ন ইউনিটে তার চিকিৎসা চলছে।

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম জানান, শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুনে পু’ড়িয়ে হ’ত্যার চেষ্টার অ’ভিযোগে নারী ও শিশু নি’র্যাতন দ’মন আ’ইনে পুলিশ কনস্টেবল প্রকাশ প্রেমানন্দকে আ’সামি করে দেওয়ানগঞ্জ থানায় মা’মলা দা’য়ের হয়েছে। মা’মলাটির বাদী হয়েছেন ইয়াছমিন আক্তারের সহোদর বড় বোন হাজেরা বেগম। এ ঘটনায় গ্রে”প্তার প্রকাশ প্রেমানন্দকে আ’দালতের মাধ্যমে জামালপুর জেলা কা’রাগারে পাঠানো হয়েছে। উৎস: কালের কণ্ঠ।

ad

পাঠকের মতামত