315273

মাস্ক নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ

নিউজ ডেস্ক।। সারা বিশ্বে মহামারি রূপ নেওয়া করোনাভাইরাসের এখনো কার্যকর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। তাই মরণঘাতী এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বিশেষজ্ঞদের দেওয়া বিভিন্ন নির্দেশাবলির মধ্যে একটি হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার করা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আমাদের কি আরও বেশি মাস্ক ব্যবহার করা উচিত? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ প্যানেলের দ্বারা এই প্রশ্নের মূল্যায়ন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

এই প্যানেলটি পূর্বের চেয়ে আরও বেশি সুক্ষ্ম পদক্ষেপের জন্য গবেষণা করছে। যুক্তরাষ্ট্রে করা একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কাশি ৬ মিটার এবং হাঁচি ৮ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। প্যানেলটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডেভিড হেইম্যান বিবিসি নিউজকে বলেছেন, নতুন গবেষণাটি মাস্ক সম্পর্কে পূর্বের দেওয়া পরামর্শ পরিবর্তন করতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ : সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কাশি বা হাঁচি দেওয়া এমন কারও থেকে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে যারা অসুস্থ এবং যাদের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা গেছে তাদের মাস্ক পরা উচিত। একই সঙ্গে এটাও বলা হয়েছে, সুস্থ ব্যক্তিদের কেবল তখনই মাস্ক পরতে হবে যদি তারা সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে যায় অথবা যদি তারা নিজেরাই হাঁচি-কাশি দেয়। এছাড়াও এতে আরও বলা হয়েছে, মাস্ক পরা তখনই কার্যকর হবে যদি আমাদের হাত আমরা পরিষ্কার রাখি এবং মাস্কগুলো একবার ব্যবহারের পর নিরাপদ স্থানে ফেলে দেই।

কেমব্রিজের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষকরা কাশি বা হাঁচির পর কী ঘটে তা সুনির্দিষ্টভাবে মূল্যায়ন করতে উচ্চ-গতির ক্যামেরা এবং অন্যান্য সেন্সর ব্যবহার করেন। তাদের গবেষণায় একই রকম তথ্য উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে দেখা গেছে হাঁচি ৬ মিটার এবং কাশি ৬ মিটার পর্যন্ত জীবাণু বহন করা নিয়ে যেতে পারে। তাই এই গবেষণায় আক্রান্ত ও উপসর্গ বিদ্যমান এমন ব্যক্তিদের মাস্ক পরার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে।

অধ্যাপক বৌরউইবার বলেন, ‘কিছু পরিস্থিতিতে, বিশেষত গৃহের অভ্যন্তরে কম বায়ুচলাচলকৃত রুমে মাস্ক পরলে অন্য সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।’ এই বিষয়ে উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, সংক্রমিত কারও মুখোমুখি হওয়ার সময় মাস্ক পরলে তাদের শ্বাসের প্রবাহ এবং ভাইরাসটির প্রবাহ আপনার মুখ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে সহায়তা করতে পারে। ব্যবহৃত মাস্কগুলো সাধারণত ক্ষুদ্রতম কণিকা নিঃসরণ করা থেকে সুরক্ষা দেয় না কারণ এগুলোতে ফিল্টারিং সিস্টেম নেই। তবে এগুলো হাচি-কাশি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাতাসের গতি পথ পরিবর্তন করতে পারে।

কখন ও কেন মাস্ক ব্যবহার করবেন : * নিজে সুস্থ থাকলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বা সন্দেহ করা হচ্ছে-এমন ব্যক্তির শুশ্রূষা করার সময়ই শুধু আপনার মাস্ক পরার প্রয়োজন রয়েছে। * হাঁচি বা কাশি থাকলে মাস্ক ব্যবহার করুন, যেন আপনার শরীরে করোনাভাইরাস থাকলে তা অন্যদের মধ্যে না ছড়ায়। * মাস্ক ব্যবহার তখনই কার্যকর, যখন আপনি অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ড রাব (বাজারে থাকা সাধারণ হেক্সিসল বা অনুরূপ পণ্য) বা সাবান-পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করেন। * মাস্ক ব্যবহার করতে হলে এর ব্যবহারবিধি জেনেই করা উচিত।

কীভাবে ব্যবহার করবেন : * মাস্ক পরার আগে হাত (সাবান-পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড বা হ্যান্ড রাব দিয়ে) পরিষ্কার করে নিন। * মাস্ক পরার সময় এর সামনের অংশ ধরবেন না। * নাক ও মুখ মাস্ক দিয়ে ঢেকে ফেলুন এবং মনে রাখবেন, মুখ ও মাস্কের মধ্যে যেন কোনো ফাঁকা স্থান না থাকে। * ব্যবহারের সময় মাস্ক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। আর যদি স্পর্শ করেন, তবে হাত (সাবান-পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড বা হ্যান্ড রাব দিয়ে) পরিষ্কার করে নিন। * ব্যবহৃত মাস্কটি আর্দ্র বা ভেজা বা স্যাঁতসেঁতে মনে হওয়ামাত্রই তা বদলে ফেলুন। ডিসপোজিবল বা একবার ব্যবহারের জন্য তৈরি মাস্ক বারবার ব্যবহার করবেন না। * মাস্ক অপসারণের সময় এর সামনের অংশ স্পর্শ করবেন না। মাস্ক খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে তা ঢাকনা দেওয়া ময়লার বাক্সে ফেলুন। * মাস্ক অপসারণের পর হাত পরিষ্কার করে নিন।

ad

পাঠকের মতামত