310303

২৪ ঘন্টায় বিএসএফের গুলিতে ৬ বাংলাদেশির মৃত্যু

বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশির মৃতদেহ। গত ২৪ ঘন্টায় তিন সীমান্তে বিএসএফের হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৬ বাংলাদেশি। বুধবার ভোর থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত তিন সীমান্ত এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

তিন সীমান্ত এলাকা হলো:– নওগাঁর পোরশার হাঁপানিয়া সীমান্ত, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা সীমান্ত ও যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভুলোট সীমান্ত।

এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নওগাঁয় তিনজন এবং যশোরের বেনাপোল সীমান্ত একজন বিএসএফের হাতে নিহত হন। এছাড়া গতকাল বুধবার (২২ জানুয়ারি) লালমনিরহাটে নিহত হন দু’জন। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য:-

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ সীমান্তে তিন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ভোরে পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে ভারত থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে নিতপুর সীমান্তে তিন ব্যবসায়ীকে গুলি করে বিএসএফ। এরমধ্যে গুলিবিদ্ধ একজনের লাশ বাংলাদেশ সীমান্তে ও অন্য দুজনের লাশ ভারতীয় সীমান্তে পড়ে রয়েছে।

নিহতরা হলেন- পোরশা উপজেলার বিষ্ণপুর বিজলীপাড়ার শুকরার ছেলে রনজিত কুমার (২৫), দিঘীপাড়া গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে মফিজুল ইসলাম (৩৫) এবং কাঁটাপুকুরের মৃত জিল্লুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন (৩২)।

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: বুধাবার (২২ জানুয়ারি) ভোর লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা সীমান্ত এলাকায় দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফের গুলিতে তারা নিহত হয়। গুতামারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সাবু মিয়া জানান, বিএসএফের গুলিতে দুজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি।

গতকাল ভোরে হাতিবান্ধা উপজেলার গুতামারী ইউনিয়নের বনচৌকি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহতরা হলেন- আমঝোল গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে সুরুজ (৩৮) এবং একই গ্রামের উসমান আলীর ছেলে সুরুজ (১৭)।

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভুলোট সীমান্তে হানেফ আলী ওরফে খোকা (৩৫) নামে এক গরুর রাখাল ভারতের বিএসএফে’র নির্যাতনে মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হানেফ আলী শার্শার অগ্রভুলোট গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে। হানেফ আলীর চাচা শহিদুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

মৃতের স্বজনরা জানান, ভারতের বন্যা বাড়ীয়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বুধবার দুপুরে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।

স্থানীয়রা জানান, হানেফ আলী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে গরু আনতে গিয়ে বন্যাবাড়ীয়া ক্যাম্পের বিএসএফের হাতে ধরাপড়ে। এরপর বিএসএফ সদস্যরা তার উপর নির্যাতন চালালে হানেফ সেখানে মারা যান। পরে তাকে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। হানেফ আলীর মৃতদেহ ভারতের গাইঘাটা থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য তবিবুর রহমান হানেফ আলী নিহতের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভারত থেকে বুধবার বাড়ি ফেরার পথে ভারতে বিএসএফের হাতে ধরাপড়ে ও তাদের নির্যাতনের এক পর্যায়ে মারা গেছে বলে তিনি শুনেছেন।

এ বিষয়ে ১৬ বিজিবির হাঁপানিয়া ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোখলেছুর রহমান জানান, তিনজন গুলিবিদ্ধের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একজন মারা গেছে। অপর দুইজন ভারতের অভ্যন্তরে মারা গেছে কিনা খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তিনি পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে চিঠি দিবেন বলেও জানান।

ad

পাঠকের মতামত