309981

বউভাতের দাওয়াত দিয়ে ফেরা হলো না তাদের

জেলা প্রতিনিধিঃ আগামী ২৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) শফিকুল ইসলাম জ্যোতি ও ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার বউভাতের অনুষ্ঠান। কিন্তু তার আগেই মর্মান্তিক প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা কেড়ে নিল পিয়াশার প্রাণ। প্রাইভেটকার চালাচ্ছিলেন পিয়াশার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি। আহত হয়েছেন তিনিও। আর দুর্ঘটনায় পিয়াশার সঙ্গে প্রাণ গেছে তার বড়বোন তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা ও খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী তিথীর।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম জ্যোতি অসুস্থ অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে শহরের বিমান অফিস মোড়ে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আঘাত করে পাশের দেয়াল ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে তিনজন নিহত ও শিশুসহ চারজন আহত হন।

নিহতরা হলেন- যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার শফিকুল ইসলাম জ্যোতির স্ত্রী ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশা (২৫), শহরের রবীন্দ্রনাথ সড়ক (আরএন) সুমন ইসলামের স্ত্রী তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা (৩০), একই এলাকার মনজুর হোসেনের স্ত্রী তিথী (৩৫)। পিয়াশা ও ইয়াশা আপন দুই বোন। আর তিথি তাদের খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী।

আহতরা হলেন- পিয়াশার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (৩২), নিহত তিথীর মেয়ে মানিজুর মাশিয়াব (৪), তাদের আত্মীয় হৃদয় (২৫) ও শাহিন (৩৫)।

নিহতদের স্বজন রোহান উদ্দিন জানান, বছর খানেক আগে ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার সঙ্গে শফিকুল ইসলাম জ্যোতির বিয়ে হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে পিয়াশাকে ঘরে তুলে নেয়ার জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে এর প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছিল।

নিহতদের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলাম জ্যোতি নিজেই প্রাইভেটকার চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে দাওয়াত দিতে বের হন। রাত ১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বিমান অফিস মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আঘাত করে পাশের দেয়াল ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ সাতজনই আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে হাসপাতালে আনার আগেই ওই তিন নারী মারা যান।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কাজল কান্তি মল্লিক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত তিথীর স্বামী মঞ্জুর হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলাম জ্যোতি প্রাইভেটকার নিয়ে আমাদের বাসায় আসেন। শহরে ঘুরতে বের হওয়ার কথা বলে গাড়িতে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে তুলে নেন। ওই গাড়িতে আমার খালাতো দুই বোনও ছিল। তারা শহরের পালবাড়ি, আরবপুর এলাকায় আলোকসজ্জা দেখতে ও বিয়ের দাওতায় দিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি। তিনি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটলো তা জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ad

পাঠকের মতামত