304782

আপিল করলে শাস্তি কত কমতে পারে সাকিবের?

ক্রীড়া প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ ক্রিকেটে যেন মরক লেগেছে। একের পর এক ঘটনা-দুর্ঘটনায় দেশের ক্রিকেট এখন কোণঠাসা। সর্বশেষ সংযোজন, আইসিসির পক্ষ থেকে সাকিব আল হাসানের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা।

ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর সেটিকে আমলে না নিয়ে বড়সড় ভুলই করে ফেলেছেন সাকিব। জানাননি আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশন (আকসু) বা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি), যার দণ্ড সাকিবকে দিতেই হবে। নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন ১৮ মাসের। তবে আপিল করে শাস্তি কমানোর সুযোগও থাকবে।

আইসিসির দুর্নীতি দমন নীতিমালায় আছে-জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সংশ্লিষ্ট যে কেউ জুয়াড়ির কাছ থেকে কোনো প্রস্তাব পেলে সেটা তৎক্ষণাৎ আইসিসি বা বোর্ডের দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে হবে। আইসিসি সেটা বারবারই খেলোয়াড়দের জানিয়ে দেয়।

এমনকি যে কোনো সিরিজ শুরুর আগে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের জুয়াড়িদের বিষয়ে সতর্ক করা হয়। প্রতিটি আন্তর্জাতিক সিরিজে আকসুর সদস্যরা উপস্থিতও থাকেন। কোনো ধরনের সমস্যায় তাদের সাহায্য নেয়া যায়।

বিসিবির পক্ষ থেকেও নিযুক্ত আছেন একজন দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা, নাম তার মেজর (অবঃ) মোর্শেদুল ইসলাম। প্রতিটি সিরিজের আগে খেলোয়াড়দের সতর্ক করার কাজটি তিনিও করেন, খেলোয়াড়দের কাছাকাছিই থাকেন।

সেটা যদি না-ও থাকেন, তবু তো সাকিবের মতো এত অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটারের এমন ভুল হবার কথা নয়। কেননা ফিক্সিং প্রতিরোধে আইসিসির সচেতনামূলক কার্যক্রমগুলোতে বরাবরই উপস্থিত থাকেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তিনি তার উত্তরসূরীদেরও এই বিষয়ে সতর্ক করে থাকেন।

২০০৮ সালের মার্চে ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের সময় সাকিব একবার জুয়াড়িদের ফোন পেয়েছিলেন। বাজে পারফরম্যান্সের বিনিময়ে ‘স্পন্সরশিপ’ অফার করা হয়েছিল তাকে।

সাকিব তখন সঙ্গে সঙ্গেই বিসিবিকে সেই প্রস্তাবের কথা জানান। জানান আকসুর তখনকার রিজিওনাল ম্যানেজার কর্নেল কাজা নুরকেও। ওই সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে হারায় আয়ারল্যান্ডকে।

এবার কেন সেটা জানালেন না? ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সাকিব নাকি বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দেননি। তাই আকসুর কাছে আলাদা করে রিপোর্ট করার কথা ভুলেই গিয়েছিলেন। কিন্তু সাকিব কি করে এত বড় ভুল করলেন?

ভুলের শাস্তিটা কিন্তু বড়সড়ই হবে। আইসিসির ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন, সে খবর চাউর হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। তবে সাকিবের বিষয়টি যেহেতু ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার নয়, তথ্য গোপন করার। তাছাড়া এর আগেও আইসিসিকে এমন প্রস্তাবের কথা জানানোর অতীত আছে তার, তাই এবার আইসিসি একটু নমনীয় হতে পারে।

আপিল করলে শাস্তি কিছুটা কমতে পারে সাকিবের। তবে সেটাও যে ছয় মাসের কম হচ্ছে না, আন্দাজ করাই যাচ্ছে। কেননা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তথ্য গোপনের সর্বনিম্ন শাস্তি এটাই। সাকিবকে এই সর্বনিম্ন শাস্তিও যদি আইসিসি দেয়, তবে ভারত সফর শেষ টাইগার দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের।

যদিও আইসিসির পক্ষ থেকে এখনও শাস্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। সেটা আসলে বোঝা যাবে, ঘটনা কোন দিকে মোড় নিচ্ছে।

ad

পাঠকের মতামত