303986

চার মাসে ৪০ বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও

বিগত চার মাসে ৪০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে নজির তৈরি করলেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তমাল হোসেন। চলতি বছরের ১১ জুন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় যোগদান করার পর থেকেই একের পর এক সামাজিক আন্দোলন, বাল্যবিয়ে এবং ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি।

কখনো গণমাধ্যমকর্মীদের আবার কখনো জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করেছেন তার বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে। জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বিগত চার মাসে ৪০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন ইউএনও তমাল হোসেন। নিজের পরিকল্পনায় উপজেলার সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিলবোর্ড স্থাপন করেছেন। বিশেষ করে উপজেলার সর্বসাধারণের কাছে ০১৩১৫-১৭১৩৫৪ নম্বরটি বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিং প্রতিরোধের নম্বর হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে।

এমনকি বিলবোর্ডে বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিং কী এবং এর ফলে কী শাস্তির বিধান আছে তাও উল্লেখ করেছেন তিনি। এরই মধ্যে সম্প্রতি চাপিলা ইউনিয়নের ধানুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বিউটি খাতুন নিজের অমতে এবং প্রাপ্তবয়ষ্ক না হওয়ার বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ নম্বরে ফোন দিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন। পরে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়া হয়।

কখনো বর যাত্রী, কখনো কনে যাত্রী আবার কখনো সাধারণ মানুষ সেজে অভিযান চালাচ্ছেন একের এক পর বাল্যবিয়ের অনুষ্ঠানে। এদিকে ইভটিজিং রোধে বখাটেদের আইনের আওতায় এনে কারাদণ্ড ও জরিমানা আদায় করছেন ইউএনও। আরেকদিকে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা করে মেয়েদের নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার পথ সুগম করছেন। এলাকায় এখন আর তেমন বখাটের উৎপাত দেখা যায় না বলে জানান স্থানীয়রা।

এসব বিষয় নিয়ে তমাল হোসেন বলেন, ‘চলনবিল অধ্যুষিত গুরুদাসপুরে বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিংয়ের পরিমাণটা অনেক বেশি। যেহেতু ইভটিজিং থেকেই বাল্য বিয়ের উৎপত্তি হয়। সে কারণে আমি প্রথমে সেটাই প্রতিহত করতে শুরু করি। সামাজিক এই আন্দোলনে বেশ সাড়াও পাচ্ছি। সবার সহযোগিতায় একদিন গুরুদাসপুর উপজেলা বাল্যবিয়ে এবং ইভটিজিং মুক্ত হবে।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিং প্রতিহত করতে ইউএনও স্যারের নির্দেশে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’

ad

পাঠকের মতামত