303023

“বুয়েটে ভর্তি হবার পরই বেপরোয়া হয়ে ওঠে জিয়ন”

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার দূর্গাপুর ধলারপাড় গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। ২০১৩ মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি হয় জিয়ন। এরপর নটরডেম থেকেও ২০১৫ সালে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ নিয়ে বুয়েটে ভর্তি হয় জিয়ন।

জিয়ন বুয়েটের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় গত সোমবার জিয়নকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে জড়িতদের সঙ্গে জিয়নকেও দেখা যায়।

এ দিকে মেফতাহুল ইসলাম জিয়নের বাবা মিঠাপুকুরের দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম জানান, টেলিভিশনের সংবাদে দেখি, আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে আমার ছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

শহিদুল ইসলাম আরও জানান, আমি একজন ব্যবসায়ী মানুষ। আমার বড় ছেলে সোহানুর রহমান সোহাগ রংপুরে ডক্টরস কমিউনিটি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ইন্টার্নি করছে। ছোট মেয়ে জেরিন ক্যান্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ১০ম শ্রেণিতে পড়ছে। আমি নিরীহ মানুষ, জিয়ন আমার পরিবারের কর্ণধার। তাকে ছাড়া আমার বেঁচে থাকা বেকার। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য, আমার ছেলের সঠিক তদন্ত করে তাকে প্রাণ ভিক্ষা দেওয়া হোক।

শঠিবাড়ী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জিয়নের শিক্ষক শ্রী হরেন্দ্র নাথ সাহা জানান, ২০১৩ সালে জিয়ন আমার বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পায়। বিদ্যালয় পড়ার সময় তাকে উগ্রতা ও শৃঙ্খল ভঙ্গে দেখি নাই। আমার বিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম আমার শিক্ষার্থী জিয়নের মাধ্যমে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রুপ দেয়।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমার মনে হয় বিষয়টি শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারাবিশ্বের মানুষের প্রাণেও একটা নাড়া দিয়েছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক বলেও দাবি জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জিয়নের এলাকাবাসী জানায়, জিয়নের পরিবার খুবই সাদামাটা জীবন-যাপন করে। তার বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গ্রামে কোনো অপকর্মের সঙ্গে জিয়ন জড়িত না থাকলেও বুয়েটে ভর্তির পর থেকে সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ছাত্র রাজনীতির কারণে জিয়ন এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে জানায় এলাকাবাসী।

মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাফর আলী বিশ্বাস জানান, বুয়েট শিক্ষার্থী মেফতাহুল ইসলাম জিয়নের নামে এই থানায় মামলা বা কোনো অভিযোগ নেই। তবে এই থানা থেকে দুজন অফিসারকে পাঠানো হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেওয়ার জন্য।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জনকে বহিষ্কার করা হয়।

ad

পাঠকের মতামত