302793

‘নেশাগ্রস্ত’ শুনে বিয়ে ভেঙে দেন হবু শাশুড়ি, বিয়ের দাবি করায় প্রেমিকাকে ঘাড়ধাক্কা

দীর্ঘদিন ধরে প্রেম, একসময় শারীরিক সম্পর্ক। ঘটনা গড়ায় বিয়ে পর্যন্ত। তরুণ-তরুণীর দুই পরিবার মিলে দেনমোহর ঠিক করলেও ভেঙে যায় বিয়ে। লোকমুখে ছেলের প্রেমিকা ‘নেশাগ্রস্ত’ শোনার পর বেঁকে বসেন মা। তারপর থেকেই বিয়ের দাবিতে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের গোমরাকান্দা গ্রামে প্রেমিক জুনাইদের (২৫) বাড়িতে অনশন শুরু করেন তার প্রেমিকা। কিন্তু তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তরুণীর।

এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করেছেন ওই তরুণীর বাবা। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল আসামি জুনাইদকে খুঁজছে পুলিশ। জুনাইদের বাবার নাম আবু তালেব। জানা গেছে, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে জুনাইদ তার প্রেমিকার সঙ্গে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নিজ প্রেমিকার কথা পরিবারকেও জানান। গত ছয় মাস আগে ছেলের ভালোবাসার সম্পর্ক মেনে নিয়ে বিয়ের আয়োজন শুরু করে পরিবার।

নান্দাইল উপজেলার পাঁচবাড়ীয়া গ্রামে বসবাস জুনাইদের প্রেমিকার। দুই পরিবার একত্রিত হয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। দেনমোহর ঠিক করে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য রোজার ঈদের দ্বিতীয় দিন নির্ধারণ হয়। কিন্তু এর মধ্যে জুনাইদের মা জানতে পারেন তার হবু পুত্রবধূ নেশাগ্রস্ত। ফলে বিয়ে ভেঙে দেন তিনি।

এ কথা জানার পর জুনাইদের প্রেমিকা তার বাড়িতে অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবি জানান। গতকাল সোমবার তিনি প্রেমিকের বাড়ি অনশন শুরু করেন। কিন্তু জুনাইদের পরিবার তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া চেষ্টা করে। এ খবর জানতে পেরে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ ওই তরুণীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

থানায় তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানার পর জুনাইদের পরিবারসহ মীমাংসায় বসে। তারপরও বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই তরুণীর বাবা বাদি হয়ে জুনাইদকে মূল আসামি করে তার পরিবাররের কয়েকজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।

পরে থানায় উপস্থিত জুনাইদের বাবা আবু তালেব, চাচা মালেক মাষ্টার ও নানা মতিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। ওই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তরুণীর সঙ্গে কথা হলে আমাদের সময়কে তিনি তাদের প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বিয়ে ঠিক হওয়ার পরও মানুষের কথা শুনে তারা আমাদের বিয়ে ভেঙে দেয়। আমাদের দুটি আত্মাকে তারা মেরে ফেলেছে। তাদের বাড়িতে বিয়ের দাবি নিয়ে গেলেও জুনাইদের মা আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জুনাইদ বা তার পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসেম জানান, তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল আসামি জুনাইদকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত