302435

জিকে শামীমের প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে আছে আড়াই হাজার কোটি টাকার কাজ

নিউজ ডেস্ক।। সরকারের চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিশেষ ক্যাটাগরির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের কর্ণধার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম গ্রেফতার হওয়ায় তার প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ঠিকাদারী চুক্তি অনুযায়ী জিকে বিল্ডার্স এসব কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে তাদের ওয়ার্ক অর্ডার বাতিল করা হবে।একই সঙ্গে নিরাপত্তা জামানত বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমানে যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে সেগুলো হলো, ১৫০ কোটি টাকার অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবন ও ১৫০ কোটি টাকার ক্যাবিনেট ভবন, আগারগাঁওয়ে ৪০০ কোটি টাকার এনবিআর ভবন, বিজ্ঞান জাদুঘরে ১০০ কোটি টাকা, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বর্ধিত ভবন নির্মাণে ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প, ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে র‌্যাব হেডকোয়ার্টার, এনজিও ফাউন্ডেশনের ৬৫ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে।

এছাড়া ২০০ কোটি টাকা ব্যায়ের মহাখালী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও এর ফিনিশিং পর্যায়ের অল্প কিছু কাজ বাকি রয়েছে। ইতিমধ্যে বেইলি রোডে ৩০০ কোটি টাকার পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়েছে। পঙ্গু হাসপাতালে ৩৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজও শেষ পর্যায়ে। আগামী ডিসেম্বর মাসে এনবিআর ভবনের উদ্বোধনের কথা রয়েছে। বর্তমানে এর কাজ ফিনিশিং পর্যায়ে রয়েছে।
এর পাশাপাশি ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার অ্যাজমা হাসপাতাল, ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্যান্সার হাসপাতাল, ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার সেবা মহাবিদ্যালয়, ৮০ কোটি টাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল, ৮০ কোটি টাকার বিজ্ঞান জাদুঘর, ১২ কোটি টাকার পিএসসি, ৬৫ কোটি টাকার এনজিও ফাউন্ডেশন এবং মিরপুর-৬ তে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ রয়েছে।

জিকে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পরও এসব প্রকল্পের কাজ সপ্তাখানেক চলমান ছিল। তার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার পর থেকে কাজগুলো বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে জিকে বিল্ডার্সের প্রধান প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, প্রকল্পগুলো চালিয়ে নেয়ার মতো নগদ অর্থ এখন আর আমাদের হাতে নেই। জিকে শামীমের স্বাক্ষর করা চেকগুলো ক্যাশ করতে না পারায় পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে এবং কাজ চালিয়ে নেয়ার মতো নগদ অর্থের সঙ্কট থাকায় কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।

এদিকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কাজগুলো আটকে যাওয়ায় চিন্তিত গণপূর্ত অধিদপ্তরর। গণপূর্ত অধিদপ্তর ইতিমধ্যেই মাঠ পর্যায় থেকে প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পর্কে বাস্তব প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছে। তাতে যেসব কাজে জয়েন ভেঞ্চার বা যৌথ কোম্পানির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সেগুলো চালিয়ে নেয়ার উপায় বের করার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে তার আগে জিকে বিল্ডার্সের সঙ্গে বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা কোন ব্যক্তিকে কাজ দেইনি। পিপিআর অনুযায়ী সরকারি সব নিয়ম মেনেই তার প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। সে অনুযায়ী তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। টেন্ডারে উল্লেখিত দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী তারা যদি কাজ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে চুক্তি অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেখানে টেন্ডার বাতিল, পূণ:টেন্ডার কিংবা ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করারও সুযোগ আছে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেছেন, জি কে শামীমের গ্রেফতারের কারণে কাজ সাময়িক বন্ধ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমরা এখন কাজগুলো কীভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়, সেটা ভাবছি। আমরা তাদের প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে চিঠি দেব। যদি তারা এ বিষয়ে অপরাগতা প্রকাশ করে তাহলে আমরা অন্য প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ দেব। আমাদের সময়.কম।

ad

পাঠকের মতামত