302306

গবির ৬ শিক্ষার্থী বানালো কথা বলার রোবট ‘মিরা’

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী কথা বলা রোবট ‘মিরা’ তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মূলত তারা একাডেমিক প্রজেক্টের অংশ হিসাবে এ রোবট তৈরি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শেষ বর্ষের ৬ জন শিক্ষার্থী।কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রিফাত, মাহতাবুর রহমান সবুজ, মাহমুদা আক্তার নিঝুম ,মারুফ হোসাইন, সাফিক হাসান, শারমিন নাহার তোহফা বিভাগের চূড়ান্ত প্রজেক্ট হিসাবে তাদের উদ্ভাবন করা এই ‘মিরা’ রোবট জমা দেন।

আড়াই মাসের প্রচেষ্টা ও ৪৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত রোবটে থাকছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সী, ওপেন সিভি, মেশিং লার্নিং, পিআইডি কন্ট্রোলসহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি।নিজেদের তৈরি বোরট নিয়ে মাহতাবুর রহমান সবুজ বলেন, “এতদিন রোবট সম্পর্কে শুধু শুনলাম, এখন নিজেরা তৈরি করলাম। সফ্ল হয়ে খুবই ভালো লাগছে।”

নিজেদের তৈরি রোবটের বিশেষ বৈশিষ্ট্য জানান দিতে গিয়ে সবুজ বলেন, “আমাদের রোবটের প্রধান ফিচার হচ্ছে, এটি পোর্টেবল এবং অটোমেটেড অর্থাৎ কোন এক্সটারনাল কন্ট্রোলিং ছাড়াই পূর্ণ কাজ করতে সক্ষম। অর্থাৎ আমাদের রোবট এর সফটওয়ার চালুর পরে একে কন্ট্রোল করতে হয় না, নিজে নিজেই সব কাজ করতে পারে।

বর্তমানে আমাদের রোবট মানুষের সাথে ন্যাচারালি কথা বলতে, বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে ও ফিজিক্যালি এবং ভার্চুয়ালি বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতে পারে। যেমন ভার্চুয়াল কাজ বলতে বলা যায় ব্যবহারকারীর কোনো ইমেল সেন্ড করা ফেইসবুকের নটিফিকেশন চেক করা, পছন্দের গান বাজানো, নির্দিষ্ট কাজের কথা মনে করিয়ে দেয়া (রিমাইন্ডার), দৈনিক এবং আগাম আবহাওয়া পূর্বাভাস জানিয়ে দেয়া, সময় তারিখ জানানো ইত্যাদি।

আর ফিজিক্যাল বলতে বলা যায়, আমাদের রোবটের সাথে মাল্টি এক্সিস এ মটর রয়েছে, যা রোবটের আঙ্গুল, কনুই, কাধ, ঘাড়, মাথাসহ বিভিন্ন অঙ্গ নারানো তে সাহায্য করে। এর ফলে আপনি রোবটকে ইন্সট্রাকশনের মাধ্যমে অঙ্গভঙ্গি করাতে পারবেন, যেমন আপনার কথা অনুযায়ী সে তার বিভিন্ন অঙ্গ নাড়াতে, আপনার সাথে হাই ফাইভ অথবা হেন্ডশেক করতে , আপনাকে বিভিন্ন পোজ দিয়ে দেখাতে পারবে। এমনকি, কাজ করার সময় আপনার কফির কাপ ধরে রাখতে সক্ষম রোবট।

তাছাড়া সে আপনার সাথে রক পেপার সিজার খেলতে পারবে, জোকস শুনাতে পারবে, তার সাথে যারা (ব্যবহারকারী) কথা বলবে তাদের ইনফরমেশন (নাম, জন্মদিন, তার ব্যাক্তিগত তথ্য ইত্যাদি) মনে রাখবে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে ঐ তথ্যের উপর ভিত্তি করে কনভার্সেশন চালাবে, এছাড়াও কথা বলার সময় বিভিন্ন ন্যাচারাল অংভঙ্গি করবে ইত্যাদি।

রোবট মিরা তৈরিতে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করতে হয়েছে তাদের। ফ্রেইমওার্কের ওপর রোবট তৈরি করা হয়েছে, তা লিখা হয়েছে জাভা কোডে। রোবটের স্ক্রিপ্ট যা রোবটকে চালানোর বিভিন্ন ইন্সট্রাকশন দেয়, তা লিখা হয়েছে পাইথন দিয়ে। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোসেসিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে এআইএমএল (AIML- Artificial Intelligence Markup Language) কোড এবং হার্ডওয়্যার কনফিগারেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ডট কনফ (কনফিগারেশন) কোড।

উল্লেখ্য রোবট মিরা’র দেহের উপরের অংশ তৈরি হলেও নিচের অংশের কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। যে কারণে এটি এখনো মানুষের মত চলাফেরা করতে পারে না। তাই রোবটটির আরো উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে এটি এখনো রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D) প্রোগ্রেসের মধ্যে আছে।

ad

পাঠকের মতামত