301775

বাগানেই পচে যাচ্ছে কাশ্মিরের আপেল!

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ কাশ্মিরে ভরা মৌসুম, বাগানে বাগানে পেকে আছে আপেল, কিন্তু সেগুলো সংগ্রহ করায় আগ্রহ নেই আপেল বাগান মালিকদের। ফলে গাছ থেকে নিচে পড়ে বাগানেই পচে যাচ্ছে সুস্বাদু আপেল। প্রায় দুই মাস ধরেই অশান্ত কাশ্মির। ভারতীয় বাহিনী অচল করে রেখেছে গোটা উপত্যকা। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সাথে সাথে সেখানকার মানুষদের জীবনও অচল করে দেয়া হয়েছে। বাইরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কাশ্মিরের। ফলে তার প্রভাব পড়ছে কৃষিতেও।

রাজনৈতিক নেতাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে। তাদের নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। কারফিউ উপেক্ষা করে কখনো কখনো বিক্ষোভে ফুঁসে উঠছে মানুষ। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এমন অবস্থায় এই মৌসুমে আপেল বাজারজাত না করে প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাশ্মিরের বাগান মালিকরা। কেউ রাগে-ক্ষোভে কেউ বা স্বাধীনতাকামীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপেল নষ্ট করে ফেলছেন। যে ফসলটি অঞ্চলটির অর্থনীতির জন্য খুবেই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতি বছর লাখ লাখ টন আপেল উৎপাদিত হয় কাশ্মিরে। কাশ্মিরের অর্ধেকের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে আপেল চাষের সাথে জড়িত। মদধ্যাঞ্চলীয় সোপিয়ান জেলার একটি আপেল বাগানের মালিক গুলাম নবী ও তার ভাই- যারা প্রতি মৌসুমে প্রায় ৭ হাজার ঝুড়ি আপেল বিক্রি করেন।

এতে তাদের আয় হয় অন্তত ৭০ লাখ ভারতীয় রুপি; কিন্তু এবার তাদের কোন কাজ নেই আপেল বাগানে। আপেলের ভারে ঝুলে পড়ছে গাছের ডাল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবী বলেন, এগুলো গাছেই পচতে দিন। এই বাগানের মালিক এএফপিকে বলেন, আমরা আপেল প্রক্রিয়াজাত করলে ভারত সরকার বিশ্বকে সেটি দেখিয়ে বলবে যে, কাশ্মিরে সব কিছু স্বাভাবিক আছে; কিন্তু বাস্তবে এখানকার অবস্থা মোটেই স্বাভাবিক নয়।

অনেক কৃষক বলছেন, তারা স্বেচ্ছায়ই এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। যদিও এর কারণে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে, এমনকি একজন বাগান মালিকের ওপর হামলাও হয়েছে। এক গ্রামে সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা আপেল সংগ্রহের জন্য সাজিয়ে রাখা খালি ঝুড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। কেন এমন পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করছেন- সে বিষয়ে বাগান মালিক গুলাম নবী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এটিই প্রতিবাদের একমাত্র পদ্ধতি আমাদের কাছে। আর কী করার আছে আমাদের?

স্থানীয়রা বলছে, তারা সব সময়ই ভারতীয় বাহিনীর আতঙ্কে থাকে। প্রায়ই তারা মাঝরাতে বাড়ি থেকে যুবকদের ধরে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশ না করে একজন বলেন, ‘(মিলিশিয়াদের) ভয়ও আছে। তবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ভয় তার চেয়েও বেশি। কাশ্মিরী আপেল চাষীদের এই প্রতিবাদের ফলে ভারতের বাজারে আপেল সরবরাহ চার ভাগের একভাগে নেমে এসেছে।

ad

পাঠকের মতামত