289941

নুসরাত হত্যার বিচারের দাবিতে ‘গণভবন থেকে বঙ্গভবন’ মানববন্ধন

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর গণভবন এলাকা থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত মানববন্ধন পালিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই মানববন্ধনে অংশ নেয়। বঙ্গভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত এই মানববন্ধনের পথ ধরা হয় রাজউক ভবন-দৈনিক বাংলার মোড়, পল্টন মোড়, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, শাহবাগ, কাঁটাবন, বাটা সিগন্যাল, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি-কলাবাগান হয়ে আসাদগেট।

বঙ্গভবন সংলগ্ন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান ফটকে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সপ্তাহ পালনের ঘোষণা দেন। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এটি শুধু সিপিবির কর্মসূচি নয়, এটি দেশের সব মানুষের কর্মসূচি। দল মত নির্বিশেষে সব মানুষ এতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে নারী নির্যাতন দূর করবে।

নুসরাতকে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কোনো বিচ্ছন্ন ঘটনা নয়, এদেশে সারাবছরই ধর্ষণের উৎসব চলে। এসব ধর্ষণের শিকার হয় মূলত শিশুরা। কারণ অপরাধী জানে এদেশে কোনো অপরাধেরই বিচার হয় না। সরকার আর সরকারি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেই সব অপরাধ মাফ। এরা যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলের সঙ্গে যোগ দেয়।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিল। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা এর আগে তাকে যৌন নিপীড়ন করে বলে অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে নুসরাতের পরিবারতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যায় নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। তাকে মামলা তুলে নেওয়া কথা বলে ভয় দেখানো হয়। পরে সেখানে বোরকা পরিহিত ৪/৫ ব্যক্তি নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

সোমবার (৮ এপ্রিল) দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ঢামেকের ডাক্তাররা জানান, নাজুক শারীরিক অবস্থার কারণে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব না। শনিবার রাতে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে নুসরাত মারা যায়।

ad

পাঠকের মতামত