263559

টাকার অভাবে চিকিৎসা না করিয়ে ঢাকা মেডিকেল থেকে বউকে বাড়ি নিলেন কৃষক

নিউজ ডেস্ক।। অর্থের অভাবে চিকিৎসাসেবা নিতে না পারায় মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে গৃহবধু সালমা বেগম। অগ্নিদগ্ধ হয়ে শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে তারা। সে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়ার স্ত্রী। জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে নিজ বাড়িতে রান্না করার সময় অসাবধানতার ফলে তার গায়ের কাপড়ে আগুন লেগে যায়। তাৎক্ষণিক পরিবারের লোকজন তাকে গুরুতর অবস্থায় ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রেফার করে দেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। সেখানকার চিকিৎসকরা জানায়, সালমার শরীরের নিচের অংশের ৩০ ভাগ পুড়েছে। তাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসায় থাকতে হবে। তবে চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি হবে।

টানা ৫ দিন মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিতে তার ব্যয় হয় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা বলেন, সালমাকে সুস্থ করতে হলে আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্ত দরিদ্র স্বামীর পক্ষে তার চিকিৎসার ব্যয়ভার নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে না পারায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ঢাকা বার্ন ইউনিট থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় তাকে। সালমার স্বামী দরিদ্র কৃষক রুবেল মিয়া জানান, তার নিজের কোনো জমিজমা নেই। অন্যের জমিতে ফসল ফলিয়ে তিনি দিনাতিপাত করেন। তাদের সংসারের দুই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। এদিকে সালমা তিন মাসের অন্তস্বত্তা। এমতাবস্থায় তিনি নিরুপায় হয়ে বিত্তবানদের সাহায্য প্রার্থনা করেছেন।

বিছানায় মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরানো সালমা জানান, তার বাবা-মা মারা গেছে বহু বছর আগে। চাচার কাছে মানুষ হয়েছে সে। চাচাই তাকে দরিদ্র কৃষকের কাছে বিয়ে দেয়। তার আত্মীয়-স্বজন বলতে তেমন কেউ নেই। টাকার অভাবে সে চিকিৎসা নিতে পারছে না। এমতাবস্থায় সালমা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জের এমপি জাহিদ মালেক স্বপন, মমতাজ বেগম ও নাঈমুর রহমান দূর্জয়ের সাহায্য কামনা করেছেন। এলাকাবাসী বলেন, যেহেতু স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মানিকগঞ্জের বাসিন্দা। সেহেতু তিনি আন্তরিকতভাবে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে বিনা খরচে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।

ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, আগুনে পোড়া রোগীর চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি লাগে। হতদরিদ্র কৃষক স্বামীর পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন সম্ভব হচ্ছে না। তার চিকিৎসা সাহায্যার্তে সকলের এগিয়ে আসার জন্য তিনি আহ্বান জানান। উৎস: ইত্তেফাক।

ad

পাঠকের মতামত