251006

একদিন রাতে এক হুজুর নামাজ পড়িয়ে মসজিদ হতে বাসায় ফিরছিলেন, পথিমধ্যে এক বিধর্মী তাকে জিজ্ঞাসা করল যে….

একদিন রাতে এক হুজুর নামাজ পড়িয়ে মসজিদ হতে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে এক বিধর্মী তাকে জিজ্ঞাসা করল যে, এই পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্ম আছে, তাহলে কি সৃষ্টিকর্তাও অসংখ্য ? হুজুর লোকটির কথা শুনে পাশের বাড়ি হতে তিনটা কলস নিলেন।। তারপর একটি পুকুর হতে কলস তিনটা পূর্ন করে, চাঁদের দিকে মুখ করে মাটিতে রেখে লোকটির কাছে জিজ্ঞাসা করলেনঃ দেখতো চাঁদ কয়টা….?? লোকটি দেখলো যে প্রতিটি কলসিতে একটি করে চাঁদের প্রতিচ্ছবি আছে। লোকটি বললঃ যে তিনটা চাঁদ আছে হুজুর। কলসির সমস্ত পানি পুকুরে ঢেলে দিয়ে বললেন, আসলেই কি আকাশে তিনটা চাঁদ…??

> এবার বিশাল এই পুকুরে তাকিয়ে দেখতো, কয়টা চাঁদ দেখতে পাও…?? > লোকটি বললঃ—- মাত্র একটা চাঁদ দেখা যায় হুজুর বললেন, মানুষ নামের প্রানীর চিন্তাশক্তি সীমিত……
আর এজন্যই তুমি তিনটা চাঁদ দেখছো। কিন্তু বিশাল এই জলরাশি আর দূরের ঐ সীমাহিন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখতো….! তুমি কেবল একটিই চাঁদ দেখতে পাবে। > আর মনে রাখবে, “পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্ম থাকলেও অসংখ্য এই মানুষের সৃষ্টিকর্তা কেবল একজন-ই। আর তিনি হলেন….মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন। আর তার একমাত্র মনোনীত ধর্ম হল ইসলাম। আকাশে যেমন চাঁদ একটাই তাই তার ছায়াও একটাই হবে। অতএব পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্ম থাকলেও
সত্য ধর্ম একটাই — আর সেটা হল “ইসলাম”।।

######একদিন মদিনায় সন্ধ্যা নেমে এলো। মদিনা আলো-বাতাসে ছড়িয়ে পড়লো বেলালি সুর। মিনারের আল্লাহু ধ্বনি খেজুরের পাতা ছিড়ে পৌঁছে গেল ওলিতে গলিতে। সাহাবিরা মসজিদে। সেজদা-তাসবিহ-তেলাওয়াতে মগ্ন, নবীজী (সা.) তখন মসজিদে। এসময় দয়াল নবীর দরবারে এসে পৌঁছল একদল মুসাফির। সন্ধ্যার এর অবেলায় নবীজি মুসাফিরদের মেহমানদারির আয়োজন করলেন। সাহাবিদের বললেন, যাও মেহমানদের যথাসাধ্য আপ্যায়ন করো, ওরা আমাদের অতিথি। রাসুল নিজেও একজন অতিথি ঘরে নিয়ে গেলেন। আরবের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পাপের গন্ধ। পথিক মানেই ভয়-আতঙ্ক। লোটেরা-ডাকাত। সব ডর-ভয় উপেক্ষা করে দয়াল নবী অচেনা অজানা মেহমানদের আপ্যায়নে ব্যস্ত।

রাসুল সা. এর ঘরে সেই অতিথি ছিলো ইহুদি। জেনে শোনেও নবীজি তাকে নিজ হাতে খাওয়ালেন। ইহুদি বলে কথা। মুহাম্মদকে বিপদে ফেলাতে না পারলে আবার কেমন ইহুদি। সে মনে মনে ইচ্ছা করলো, ‘আজ আমি ঘরের সব খাবার একাই খাব’। ভাবনা ও কাজের মিল পাওয়া গেল। একেবারে পেট পুরে খেলো। নবীজি নিজেই তার বিছানা করলেন। ইহুদি মেহমান গা এলিয়ে দিল ঘুমাবের বিছানায়। গভীর রাত। নীরব নিস্তদ্ধ। ঘুম ভেঙে গেল অতিথির। একেতো মরু পথের দীর্ঘ ক্লান্তি, আবার খেয়েছেও গলা ভরে। এবার বাতরুমের প্রচন্ড চাপ। কিন্তু এতো রাতে, অজানা অচেনা জায়গায় কোথায় যাবে সে? এমন সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে বিছানা নষ্ট করে ফেলেছে আগন্তুক। এবার ভয় পেয়ে গেল ইহুদি, মুহাম্মদ সা. মদিনার স¤্রাট। তার ঘরে এমন অপকর্ম? লোকটি ভয়ে পালিয়ে গেলো। ছুটে পালাচ্ছে সে যেদিকে দুচোখ যায়। যদি মুহাম্মদের লোকেরা তাকে ধরে ফেলে – এমন ভয়ে ছুটছে প্রাণপণে। এমনি সময় তার মনে হলো সে তলোয়ার ফেলে এসেছে মুহাম্মদরে ঘরে। সে সময় তলোয়ার ছাড়া ভ্রমণ কল্পনাই করা যায় না।

কি করবে আগন্তুক? সিদ্ধান্ত নিল আবার মদিনায় যাবে, তলোয়ার ছাড়া একমুহুর্তও অসম্ভব। চুপিচুপি মুহাম্মদ সা.-এর ঘরে এসে ঢুকেছে ইহুদি। মনে বড় ভয়! কি জানি কি হয়! আরে! একি কি দেখছে সে? ইহুদি মেহমান নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না। রাসুল সা. নিজের হাতের লোকটির নষ্ট করে যাওয়া বিছানা ধুয়ে দিচ্ছেন। চেহারায় রাগের চিহ্ন নেই। রাসুল সা. তাকে দেখে ছুটে এসেছেন তার কাছে। তাকে বলতে লাগলেন, ও ভাই! আমার ভুল হয়ে গেছে, রাতে তোমার খোঁজ নিতে পারিনি, আমার জন্য তুমি অনেক কষ্ট করেছো। আমাকে মাফ করে দাও! ইহুদি ভাবতেও পারছে না এমনটা। মানুষ বুঝি এমন হয়। তাও রক্ত মাংসে গড়া মানুষ! মানবিক মানুষের উপমা। ইহুদি মেহমান এবার মাথা নুইয়ে দিলেন নবীজির কাছে। সমকণ্ঠে উচ্চারন করলেন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইলাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ। ওগো আল্লাহর নবী-আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি; আল্লাহ এক-আপনি আল্লাহর রাসুল। সূত্র : বায়হাকি ২৪

ad

পাঠকের মতামত