192467

আ. লীগের মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে কে?

আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা এমপি। ওই সভায় নির্ধারণ হবে ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন। এ নিয়ে সব প্রার্থীই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেলো দুদিনে ১২ জন আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এর মধ্যে ৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ফরম জমা দিয়েছেন।

প্রথম দিনে রাসেল আশেকী, আদম তমিজি হক, বিজিএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট আতিকুল ইসলাম, মনিপুর স্কুলের অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেন, মুহাম্মদ শাহ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক জোবায়ের আলম, এফবিসিসিআই’র সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট হেলাল উদ্দিন (হেলাল) ও রমনা-তেজগাঁও এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ এবিএম ইকবাল মনোনয়ন ফরম কেনেন।

দ্বিতীয় দিনে মো. আবেদ মনসুর, ইয়াদ আলী ফকির, শামীম হাসান, মো. মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ (মেহেদী) মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

কিন্তু এদের মধ্যে আতিকুল ইসলামই দলের হেভিওয়েট প্রার্থী। এছাড়া সাবেক সাংসদ এবিএম ইকবালও বেশ প্রভাবশালী। তবে দলের হাইকমান্ড আতিককেই বিবেচনা করছেন, এটা অনেকটাই নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি বলেন, সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেই প্রার্থী ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। আতিক ছাড়া এই মুহূর্তে হেভিওয়েট প্রার্থী নেই।

দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, প্রার্থী মোটামুটি চূড়ান্তই। নেত্রীর ঘোষণার অপেক্ষা। মনোনয়ন বোর্ডে দলের সভাপতি সম্মতি দিলেই ঘোষণা করা হবে নাম।

এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে আতিকুল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী করার ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই তিনি প্রচারে নেমে পড়েন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুরু থেকেই কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, প্রার্থী ঘোষণার আগে কেউ প্রার্থী নন। অনেকে নিজের মতো করে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় না যে, প্রার্থী নির্বাচন হয়ে গেছে। তবে আতিকুল ইসলাম দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। সে সময় শেখ হাসিনা বলেছেন, কাজ করো। সিদ্ধান্ত পরে।

তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ১৬ জানুযারির আগে কেউই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী না।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে মেয়র হওয়ার ঘোষণা দেয়নি কেউ। আজ আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক শেষে ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন, ১৪ দলের একক প্রার্থী হবে। ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রার্থী ঘোষণা করবেন ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে সমর্থন এবং তার বিজয় নিশ্চিত করবে।

এ বিষয়ে সোমবার কথা হয় আতিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস ও প্রত্যয় আছে, আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবো। আমি শতভাগ সে আশা রাখি। যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়া না হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নমিনেশন বোর্ডের মাধ্যমে যাকে মনোনয়ন দেবেন অবশ্যই আমি তার সাথে থাকবো।

তিনি আরো বলেন, আনিসুল হক (প্রয়াত মেয়র) প্রমাণ করে গেছেন অরাজনৈতিকভাবে এসেও কীভাবে ঢাকা শহরকে সুন্দরভাবে সাজানো যায়। ব্যবসায়ীরা যেমন রাজনীতিতে আসতে পারবে সে রূপ রাজনীতিবিদরা ব্যবসায় আসতে পারবে। এতে কোন বাধা নেই। আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আনিসুল হককে সুযোগ

দিয়েছেন, সেভাবে আমাকে সুযোগ দিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অবশ্যই আমিও সুন্দর ঢাকা গড়তে পারবো।
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে ভোট গ্রহণ হবে। আনিসুল হক মারা যাওয়ার পর ডিএনসিসির মেয়র পদ শূন্য হয়ে যায়। একইদিনে ডিএনসিসি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) যুক্ত হওয়া ১৮টি করে মোট ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদেও ভোট হবে। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। কাউন্সিলর পদ নির্দলীয়।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুসারে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি।

ad

পাঠকের মতামত