361816

গুলিবিদ্ধ সিনহা চান পানি, লাথি দেন ওসি প্রদীপ

নিউজ ডেস্ক।। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার (০৬ সেপ্টেম্বর) আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৯ নম্বর সাক্ষী মো. কামাল হোসেন।

জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এই সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাস, পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ আসামি। প্রথম আলো

মো. কামাল হোসেনের বাড়ি টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায়। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে খুন হন সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন।

সাক্ষ্য দেয়ার সময় কামাল হোসেন আদালতকে বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কের শাপলাপুর তল্লাশিচৌকির কাছে সিনহাকে যখন গুলি করা হয়, তখন আশপাশে ছিলেন তারা কয়েকজন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন গুলি খেয়ে সিনহা রাস্তায় পড়ে আছেন। কিছুক্ষণ পর টেকনাফের দিক থেকে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি) ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সিনহার দিকে এগিয়ে যান। এ সময় সিনহা বাঁচার জন্য ‘পানি পানি’ করছিলেন।

পানি না দিয়ে উল্টো সিনহার বুকে লাথি মারেন প্রদীপ। এরপর পা দিয়ে গলা চেপে ধরে সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করেন প্রদীপ। মামলা সংশ্লিষ্ট একাধিক আইনজীবী কামাল হোসেনের এই সাক্ষ্যের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যুগান্তর

আইনজীবীরা জানান, সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হয় কামাল হোসেনের সাক্ষ্য গ্রহণ। জবানবন্দি শেষে দুপুরে শুরু হয় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরা। বেলা দুইটায় এক ঘণ্টা বিরতি দেন বিচারক। এরপর বেলা ৩টায় পুনরায় শুরু হয় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরা। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে শেষ হয় আসামিপক্ষের ১৫ জন আইনজীবীর জেরা।

জেরা শেষে সন্ধ্যায় আদালত প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, সোমবার একজন মাত্র সাক্ষী মো. কামাল হোসেনের জবানবন্দি ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। যদিও সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আদালতে চারজন সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরার নামে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে কথা বলায় বিচারকাজে দীর্ঘসূত্রতা হচ্ছে। ইত্তেফাক

সন্ধ্যায় আদালত প্রাঙ্গণে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের আইনজীবী রানাদাশ গুপ্ত বলেন, মামলার সাক্ষী মো. কামাল হোসেন পেশায় অটোরিকশা চালক। ঘটনার পরপর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, জেলা জজ আদালতে দেয়ার জবানবন্দির মধ্যে মিল নেই। মূলত বিশেষ একটি স্বার্থান্বেষী মহলের নির্দেশে আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসেছেন কেউ কেউ।

আদালতের পিপি ফরিদুল বলেন, সোমবার পর্যন্ত ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের এই সাক্ষ্য গ্রহণ। এ সময় আরও ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হতে পারে। মামলার মোট সাক্ষী ৮৩ জন।

এর আগে প্রথম দফায় ৩ দিনে (২৩-২৫ আগস্ট) আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাত। বাংলা ট্রিবিউন

ad

পাঠকের মতামত