360281

স্বামীর লাশ নিয়ে স্কুল বারান্দায় স্ত্রীর রাতভর অপেক্ষা, অতঃপর…

নিউজ ডেস্ক।। অ্যাম্বুলেন্সে লাশ যখন শ্মশানে পৌঁছায় তখন মধ্যরাত। সেই সময় শ্মশান প্রাঙ্গণে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়িতে। শ্মশান গেট তালা। দায়িত্বপ্রাপ্তরা তালার চাবি দিলেও শ্মশানে আসেননি। কারণ মৃত ব্যক্তি ছিলেন করোনা আক্রান্ত।

লোকজন না থাকায় শ্মশানে লাশটি নামানো সম্ভব হয়নি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে লাশ নামিয়ে ফেরত যায় অ্যাম্বুলেন্স চালক। নিজ নিজ বাড়িতে ফেরত যান সঙ্গে থাকা অন্যরাও। গভীর রাতে সবাই ফেরত গেলেও ফেরত যাননি একজন। তিনি মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির স্ত্রী।

শ্মশানের পাশে গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় স্বামীর লাশ সৎকার করতে একাই পার করেন সারারাত। মধ্যরাত থেকে সকাল অবধি অপেক্ষা করেও লাশ সৎকারে শ্মশান কমিটি বা নিজ আত্ময়-স্বজনের সাহায্য না পেয়ে কয়েকজন মুসলিম ব্যক্তির সহায়তায় ওই লাশ মাটিচাপা দেন।

এ ঘটনা ঘটেছে শনিবার রাতে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পৌর শ্মশানে।

সকালে শ্মশান কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও লাশ সৎকারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি তারা। একপর‌্যায়ে বিষয়টি অবহিত করেন স্থানীয় প্রশাসনকে। পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ওই শ্মশানের পাশেই মাটিচাপা দেন প্রফুল্ল কর্মকারকে।

এ ব্যাপারে মৃত প্রফুল্ল কর্মকারের স্ত্রী কল্পনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রফুল্ল কর্মকারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত। সে কারণে তার পরিবারের সদস্যরা লাশ সৎকার করতে পারেননি। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউও লাশটির সৎকার করার জন্য এগিয়ে আসেননি। পরে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের সহায়তায় তাকে সমাহিত করার ব্যবস্থা করেন।

তিনি আরও জানান, প্রফুল্ল কর্মকার এক সপ্তাহ ধরে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী কল্পনা। মৃত্যুর পর লাশটি স্ত্রী কল্পনা বাড়ি নিতে চাইলেও বাড়িতে নেওয়ার অনুমতি মিলেনি।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, বিষয়টি জানার পরপরই পৌর মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবহিত করেন। তারা স্থানীয় লোকজনকে দিয়ে সমাহিত করার কাজটি সম্পন্ন করেছেন। উৎস: যুগান্তর।

 

ad

পাঠকের মতামত