354729

স্বামীর হুমকি অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছড়ানোর, অপমানে স্ত্রীর আত্মহত্যা

নিউজ ডেস্ক।। কুমিল্লার বুড়িচংয়ের মিথলমা গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে তাসলিমা (১৯)। আট মাস আগে কুমিল্লা মহানগরীর মুরাদপুর এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে সুজন মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। অল্প সময় পরই সুজন নানাভাবে যৌতুকের জন্য তাসলিমা ও তার পরিবারকে চাপ দিতে থাকে। এর জেরে প্রায় দেড় মাস আগে তাসলিমা তার বাবার বাড়িতে চলে যান।

স্বামী সুজন স্ত্রীর সঙ্গে কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে রেখেছিলেন। ছবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে।

এক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ নিষ্পত্তিতে শুক্রবার দুলাল মিয়াসহ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি নগরীর মুরাদপুরের সুজনের বাড়িতে গেলে তাদের কাছে উল্টো তার স্ত্রীকে চরিত্রহীন বলে অভিযোগ করে এবং তুলে রাখা ছবি দেখিয়ে আর ঘর সংসার করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

বিষয়টি তাসলিমা জানতে পেরে অপমানে শনিবার সকালে ঘরের তিরের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের মিথলমা উত্তরপাড়া গ্রামের তাসলিমাকে বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতে থাকে পরিবার। বিয়ের অল্প কয়েক দিন পর থেকেই সুজন স্ত্রীর কাছে মোবাইল ফোন, বিদেশি কম্বলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দাবি করে তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় দেড় মাস আগে তাসলিমা বাবার বাড়ি চলে আসেন।

তাসলিমার ভাই মামুন জানান, পরবর্তী সময়ে সুজন তাসলিমার সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে মোবাইল ফোনে বেশকিছু আপত্তিকর ছবি তুলে নেয়। এরপর নানাভাবে তাকে উত্ত্যক্তসহ টাকা চেয়ে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর তাসলিমার বাবা দুলাল মিয়া এলাকার কিছু লোক নিয়ে সুজনের বাড়িতে যান। সুজন উপস্থিত সবার সামনে তাসলিমার আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে মেয়ের সঙ্গে সংসার করবেন না বলে হুমকি দেয়। বাড়ি ফিরে এলে তাসলিমার মা বিষয়টি জানতে চাইলে দুলাল মিয়া বিষয়টি খুলে বলে। পরে মা বিষয়টি তাসলিমাকে বললে অপমানে শনিবার সকালে ঘরের তিরের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে বুড়িচং থানার দেবপুর ফাঁড়ির এসআই কামালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। উৎস: সমকাল

 

ad

পাঠকের মতামত