349758

যে ৮টি খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে একেবারেই খাওয়া উচিৎ নয়

কোষ্ঠকাঠিন্য তাকেই বলে যখন একজন মানুষ সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ করেন। শুনতে অদ্ভুত হলেও সত্যি যে কোষ্ঠকাঠিন্যে অনেকেই ভোগেন নিয়মিত।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার বিষয়ে খাদ্যের ভূমিকা অনেক বড়। সঠিক খাবার যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আপনাকে দূরে রাখতে পারে, তেমনি ভুল খাবার কোষ্ঠকাঠিন্যের কষ্ট আরও বাড়াতে পারে।

১. ফ্রোজেন খাবার

খুব কম সময়ে তৈরি করে ফেলা যায় বলে ফ্রোজেন খাবার পছন্দ করেন অনেকেই। কিন্তু এগুলোতে পুষ্টি উপাদান ও ফাইবার থাকে না বললেই চলে। এছাড়াও এসব খাবারে থাকে আর্টিফিশিয়াল সুইটনার, প্রিজার্ভেটিভ এবং ক্ষতিকর ফ্যাট। এগুলো সহজে হজম হতে চায় না এবং কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করে।

২. লাল মাংস

রেড মিট বা লাল মাংস অর্থাৎ গরু ও খাসির মাংসে থাকে বেশি পরিমাণে ফ্যাট। ফলে তা হজম করা কঠিন এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতেও পারে এই মাংস। অন্যদিকে মুরগী, টার্কি এবং মাছে ফ্যাট কম থাকায় তা হজম হয় সহজেই।

৩. অ্যালকোহল এবং কফি

ডিহাইড্রেশন থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় আর অ্যালকোহল ও কফি দুটৈ ডিহাইড্রেশন তৈরি করে। এই দুইটি পানীয় যদি আপনি রাত্রে পান করেন, তাহলে এর পাশাপাশি আপনাকে বেশি করে পানি পান করতে হবে,নয়তো কোষ্ঠকাঠিন্য আরও তীব্র হবে।

৪. সাদা পাউরুটি

রিফাইনড ময়দায় তৈরি সাদা পাউরুটি ব্লাড সুগার বাড়াতে পারে। শুধু তাই নয়, এতে ফাইবার অনেক কম থাকে বলে তা কোষ্ঠকাঠিন্যও বাড়াতে পারে। নিয়মিত পাউরুটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যও হবে নিয়মিত। এর বদলে লাল আটার রুটি বা হোল গ্রেইন/মাল্টি গ্রেইন পাউরুটি খেতে পারেন।

৫. পটেটো চিপস, ক্র্যাকারস এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাবার

পটেটো চিপস, ক্র্যাকার, বিস্কুট, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল এসব খাবারে পুষ্টি উপাদান নেই বললেই চলে। এগুলোতে ফাইবার অনেক কম থাকে বলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করে।

৬. চকলেট, কেক এবং কুকি

মিষ্টি খাবার আমাদের পরিপাকতন্ত্রের হজম ক্ষমতা কমিয়ে দেয় কারণ এতে থাকে উচ্চ মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, কম ফাইবার এবং উচ্চ মাত্রায় ফ্যাট। বিশেষ করে চকলেট কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে বেশি দায়ী।

৭. তেলে ভাজা খাবার

চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই- এসব খাবার মুখরোচক বটে, কিন্তু তা কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এসব খাবার হজম হতে অনেক বেশি সময় লাগে।

৮. কাঁচা কলা

পাকা কলায় বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকে, তাই তা মলত্যাগে সাহায্য করে। কিন্তু কাঁচা কলায় আবার অতিরিক্ত স্টার্চ থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সবজি হিসেবে কাঁচা কলা না খাওয়াই ভালো। এর বদলে পাকা কলা খান।

৬টি খাবার – কাল বেলা ভারী নাস্তা খেতে হয়। তবে শুরুতেই ভারী খাবার না খেয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে হালকা গরম পানি ও হালকা কোনো খাবার খেতে হবে। এর ঘণ্টাখানেক পর ভারী খাবার খেতে পারেন।

আসুন জেনে নেই যেসব খাবার খালি পেটে খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

১. মধু

প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধ হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রতিদিন সকালে মধু খেলে ওজন কমে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে হালকা গরম জলে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়াও এতে লিভার পরিস্কার থাকে। যারা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে পছন্দ করেন, তারা অন্য মিষ্টি খাবারের বদলে মধু খেতে পারেন। শরীরের দুর্বলতা ও চা-কফির নেশা কমায় মধু।

২. কাঠ বাদাম

কাঠ বাদাম আগের দিন রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকাল বেলা পানি ঝরিয়ে বাদাম খেতে হবে। এতে অনেক বেশি ভিটামিন ও মিনারেলস পাবেন। কাঠ বাদাম বা আমন্ড নিয়ম করে প্রতিদিন খেলে সারাদিন সতেজ থাকতে পারবেন। শরীরে দুর্বলতা আসবে না। অনেকে মনে করেন, কাঠবাদাম চর্বিতে পূর্ণ একটি খাবার এবং এটি ওজন বাড়িয়ে দেয়। এই ধারণা সঠিক নয়।

৩. আমলকি

আমলকির উপাকারিতা তো আমরা প্রায় সবাই জানি। তাই আমলকি থেকে তৈরি করা জুসেরও রয়েছে সমান উপকারিতা। আমলকির জুস লিভারের কার্যক্রম ভালো রাখে, হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এর আছে আরো অনেক গুণ। খালি পেটে আমলকির জুস খেতে পারলে আয়ু বৃদ্ধি পাবে। আমলকিতে ভিটামিন সি রয়েছে। এতে ত্বক পরিষ্কার হবে, চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ও চোখ ভালো থাকবে। তবে আমলকির জুস খাওয়ার ৪৫ মিনিটের মধ্যে কোনোভাবেই চা বা কফি খাওয়া যাবে না।

৪. পেঁপে

কাঁচা অবস্থায় পেঁপে সবজি আর পাকা অবস্থায় ফল। পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং পুষ্টি বেশি বলে যারা ওজন সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা পেপে খেতে পারেন নিয়মিত। খালি পেটে পাকা পেঁপে খেতে পারেন। পেঁপে হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করবে ও পেট পরিষ্কার রাখবে। সেই সঙ্গে এটা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করবে। অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবার পেঁপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

৫. তরমুজ

গরম যতই পড়ুক, এই সময়ের রসালো সব ফলের দিকে তাকিয়ে গরমটা সহ্য করে নেয়াই যায়। তেমনই একটি ফল তরমুজ। তরমুজ গ্রীষ্মকালীন একটি জনপ্রিয় ফল। গরমে তরমুজ দেহ ও মনে শুধু প্রশান্তিই আনে না এর পুষ্টি ও ভেষজগুণ রয়েছে অনেক। তরমুজ খালি পেটে খেতে পারেন। কারণ তরমুজে থাকে ইলেকট্রলাইট। যা সারারাতের পানির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। এতে ক্যালরি খুবই কম থাকে।

৬. খেজুর

খেজুর অত্যন্ত ক্যালরিবহুল একটি খাবার। এটি বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেলস ও আঁশসমৃদ্ধ। এই ভিটামিনগুলোর মধ্যে রিবোফ্লাবিন, নায়াসিন, থায়মিন ইত্যাদি। ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর করতে পারে। খেজুর হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। ডায়রিয়া বা পেট খারাপ এই ধরণের কোনো সমস্যা থাকে না। কারণ খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত