346470

সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার পরামর্শে পালিয়েছিলাম: আ’টকের পর আকবর

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নি’র্যাতনে’ রায়হান আহমদ নি’হতের প্রায় এক মাস পর এই ঘটনার প্রধান অ’ভিযুক্ত ব’হিস্কৃত এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া আ’টক হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভা’ইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, খু’নের অ’ভিযোগে অ’ভিযুক্ত এই পুলিশ সদস্যকে আ’টক করেছে আদিবাসী খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। ভা’ইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আকবরকে বলতে শোনা যায়, আমি একা মা’রিনি। পাঁচ-ছয়জন মা’রছিল। এজন্যে ম’রে গেছে।

তুমি কেন পালিয়ে গেলে স্থানীয়দের এমন প্রশ্নের জবাবে বহিস্কৃত এসআই আকবর ভুঁইয়া বলেন, সাসপেন্ড করছে, এরেস্ট হতে পারে। আকবর বলেন, আমাকে সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছিল, তুমি আপাতত চলে যাও, কয়মাস পরে আইসো। দুইমাস পরে সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে আবার সব হ্যান্ডেল করা যাবে। তবে কারা এমনটি বলেছিলেন বা কার নির্দেশে তিনি পালিয়ে যান এসম্পর্কে কিছু বলেননি।

এসময় ভিডিওতে দেখা যায়, আকবরের হাত-পা বাঁ’ধতে ‘বাঁধতে যুবকরা বলছেন- মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য সে মানুষকে মে’রে ফেলেছে। ওই যে ইন্টারনেটে ভিডিও ছাড়ছে। রায়হান নাম।

ওই যুবকরা বাংলায় কথা বললেও তাদের কণ্ঠস্বর ছিলো অবাঙালিদের মতো। ওই ভিডিও দেখে কানাইঘাটের স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, ভিডিওর যুবকদের কথাবার্তা ও এলাকা দেখে বুঝা গেছে, তারা ভারতের খাসিয়া আদিবাসী হতে পারেন।

এদিকে, সিলেটের এএসপি আব্দুল করিম জানিয়েছেন, ভারতে পালানোর সময় কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে। বিকেল ৫টায় তাকে নিয়ে সিলেটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। এরআগে অবশ্য গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছিলো আকবর ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পালিয়ে গেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে নগরীর কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। পরদিন ১১ অক্টোবর ভোরে ওসমানী হাসপাতালে তিনি মা’রা যান। রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, ফাঁড়িতে ধরে এনে রাতভর নি’র্যাতনের ফলে রায়হান মা’রা যান। ১১ অক্টোবর রাতেই রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে নির্যা’তন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মা’মলা করেন।

এদিকে, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত্বাবধানে মহানগর পুলিশের তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকে প্রধান অ’ভিযুক্ত এসআই আকবর বর্তমানে পলাতক ছিলেন। তাকে পালানোতে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অ’ভিযোগে ২১ অক্টোবর ফাঁড়ির আরেক এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তখন গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দুইদিন পরই আকবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে যান।

এদিকে গত ১৩ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের ম’রদে’হ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মা’মলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন। পরে গত ১৫ অক্টোবর পিবিআই সিলেটের আখালিয়া নবাবি মসজিদ কবরস্থান থেকে রায়হানের ম’রদে’হ উত্তোলন কাজ শেষ করে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায় ভোঁ’তা অ’স্ত্রের আ’ঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়।

পিবিআই এঘটনায় চারজনকে গ্রে’প্তার করেছে। এদের মধ্যে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুন উর রশিদকে দুই দফায় আটদিন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীকে ৫ দিনের রি’মান্ডে নেওয়া হয়। তবে তারা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জ’বানব’ন্দি দিতে সম্মত হননি। এছাড়া রায়হানের বি’রুদ্ধে ছি’নতাইয়ের অ’ভিযোগকারী সাইদুর শেখ নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রে’প্তার করে কা’রাগারে পাঠানো হয়।

সূত্র: বিডি২৪লাইভ

ad

পাঠকের মতামত