338542

সীমান্তে ভারতের বিশেষ বাহিনী, কী করবে চীন?

পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন সামরিক সঙ্কট চতুর্থ মাসে প্রবেশ করার প্রেক্ষাপটে যেকোনো সময় শান্তিপূর্ণ সমাধানের ইঙ্গিত প্রাপ্তির সাক্ষাত পাওয়া বিরল হয়ে পড়েছে। সোমবার সকালে ভারত সরকার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে যে পাঙ্গগঙ লেকের দক্ষিণ পাড়ে সেনাবাহিনী একটি চীনা অভিযান রুখে দিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বিরোধের নতুন একটি এলাকা সৃষ্টি হয়েছে।

এর পরপরই চীনা সরকার কয়েকটি বিবৃতিতে সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে পূর্ব লাদাখের দুটি স্থানে স্থিতিবস্থঅ পরিবর্তনের চেস্টা করার জন্য ভারতকে দায়ী করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে উভয় সরকার বাস্তবে কী ঘটছে, সে ব্যাপারে সামান্যই পরিষ্কার বক্তব্য দিয়েছে। তারা এর বদলে সাধারণীকরণ করার দিকেই নজর দিচ্ছে। বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জানার সুযোগ না থাকায় বেশির ভাগ সাংবাদিক পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি সূত্রের ওপর নির্ভর করে আছেন।

অবশ্য মিডিয়া রিপোর্টগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়লে দুটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায়। উভয় বিষয়ই চীন-ভারত ভবিষ্যত সঙ্কট, ও সাধারণ সম্পর্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো, মাসের পর মাস ধরে সত্যের অবলাপর পর ভারতীয় সামরিক বাহিনী এখন চরমভাবে শক্তভাবে অবস্থান গ্রহণ করেছে। অপরটি হলো, নয়া দিল্লি, তার নিজের শর্তে বিরোধের নিষ্পত্তি চায়।

ঘটনাস্থল থেকে বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদনের অভাবে এবং সেইসাথে নিষিদ্ধ ও অপরিচিত এলাকা হওয়ায় সত্যিকার অর্থে চীন-ভারত সীমান্তে কী ঘটেছিল, তা জানা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। লাদাখে এবং সাধারণভাবে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) দুই পক্ষ এখনো মানচিত্র বিনিময় করেনি, যার মাধ্যমে একে অপরের দাবির ব্যাপারে কথা বলতে পারে।

ভারত ও চীনের মধ্যকার এলএসি ভুতুরে বিষয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) যেখানে পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য মানচিত্রের মাধ্যমে (যদিও তা আন্তর্জাতিক সীমান্ত স্বীকৃত নয়) প্রতিষ্ঠিত, সেখানে এলএসিতে তা নেই। ভারতীয় ও চীনা সেনাবাহিনীর সদস্যদের অতীতে টহল দানের ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে ধরে এলএসিতে সীমান্ত চিহ্নিত করার চেষ্টা চলে। ফলে চীন বা ভারতীয় বাহিনীর কোনো এলাকা দখলের খবরগুলো সতর্কতার সাথে গ্রহণ করা দরকার।

তবে গত সপ্তাহে ও চলতি সপ্তাহে ভারত যেসব সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তাতে চীন মর্মাহত হয়েছে। মনে হচ্ছে, প্যাঙগঙ লেকের দক্ষিণ পাড়ে ভারত এক বা একাধিক চূড়া দখল করতে সক্ষম হয়েছে। চীনের কাছ থেকে চূড়াগুলো দখল করলে ভারতীয় সেনাবাহিনী কেবল চীনাদের ওপর নজরদারিই করতে পারবে না, সেইসাথে স্থিতিবস্থার জন্য চীনের সাথে আরো ভালো অবস্থানে থেকে দরকষাকষিও করতে পারবে।

যাই হোক না কেন, চলতি সপ্তাহে ভারতীয় পদক্ষেপ বর্তমান সঙ্কটের টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হতে যাচ্ছে।
সবচেয়ে অবাক করা বিশ্বাসযোগ্য খবরে বলা হয়েছৈ যে ভারত অত্যন্ত গোপন স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স (এসএফএফ) ব্যবহার করেছে হামলা চালাতে। আধাসামরিক এসএফএফ ভারতীয় বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা র-এর অধীনে। অন্তত এক ব্যাটালিয়ন এসএফএফ ভারতে অবস্থানরত জাতিগত তিব্বতীয় সদস্যদের দিয়ে গঠিত। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) মতোই এসএফএফ কাজ করে স্পেশাল অ্যাক্টিভিটিস ডিভিশন হিসেবে। এটি গঠিত হয়েছে ‘এস্টাবলিশমেন্ট ২২’ থেকে। ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর সিআইএ ও ভারত যৌথভাবে এই তিব্বতি গেরিলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
ভারত সীমান্তে এই বাহিনী পাঠিয়ে চীনকে যে একটি বার্তা দিতে চায়, তা স্পষ্ট। চীন অবশ্য এর জবাব কী দেবে তা দেখার বিষয়। দি ডিপ্লোম্যাট

 

ad

পাঠকের মতামত