338397

‘ক্র’সফা’য়ারের ভ’য় দেখিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি নেন এসআই শামীম’

নারায়ণগঞ্জের বরখাস্তকৃত পুলিশের উপ-পরিদর্শক শামীমের নি’র্যাতনের শিকার হয়ে ধ’র্ষণ ও হ’ত্যার দায় স্বীকার; অতঃপর আদালতে সঠিক তথ্য উঠে আসার পর জামিনে মুক্ত নারায়ণগঞ্জের সেই মাঝি খলিলুর রহমান লোমহর্ষ’ক সব তথ্য জানিয়েছেন। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) কারামুক্ত হওয়ার পর সময় সংবাদের কাছে এসআই শামীমের অ’ত্যাচার নিয়ে নানা তথ্য জানান তিনি।

খলিলুর বলেন, ৮ আগস্ট বিকেলে কোনো কারণ ছাড়াই নৌকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে থানা হাজতে আ’টক করে সদর থানার এসআই শামীমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। পরে দাঁড় করানো হয় অপরিচিত দুই যুবকের সামনে। পরে শামীম তাকে প্রশ্ন করেন; ‘তুই ওদের চিনিস?’ উত্তরে ‘না’ বলতেই তাকে মা’রধ’রসহ নানা নি’র্যাতন শুরু করেন। এক পর্যায়ে হাত-পা বেঁ’ধে উল্টো করে ঝু’লিয়ে রাখেন।

তিনি বলেন, চোখে মুখে গামছা বেঁধে পানি ঢালা হয়। এতে তার দম ব’ন্ধ হয়ে মা’রা যাওয়ার উপক্রম হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট এভাবে চোখে মুখে পানি ঢেলে দফায় দফায় চলে অমা’নুষিক নি’র্যাতন। এসআই শামীমের কথামতো কাজ না করলে এবং মি’থ্যা স্বীকারোক্তি না দিলে ক্র’সফায়া’রে হ’ত্যার ভ’য় দেখানো হয়। শেষে প্রাণ বাঁ’চাতে বাধ্য হয়ে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে ঝু’লন্ত অবস্থা থেকে নামানো হয়।

তিনি আরও বলেন, টানা তিনদিন থানা হাজতে আ’টকে রেখে এভাবে ‘নির্যাতন করে শেখানো স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে থানায় পুলিশের নি’র্যাতনের কারণে শা’রীরিক ও মা’নসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।

খলিলুর বলেন, মিডিয়ার কারণে আল্লাহর রহমতে আমি জামিনে বেরিয়েছি। আমি এই মি’থ্যা মা’মলা থেকে মুক্তি চাই। আমি অসুস্থ মানুষ। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে চাই। সরকার যেন আমাকে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দেন। তবে মিডিয়ায় কথা না বলতে পুলিশের পক্ষ থেকে নানাভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

খলিল মাঝির স্ত্রী শারমিন বেগম  বলেন, আগে থেকেই কিডনিসহ নানা অসুখে ভুগছিলেন তার স্বামী খলিল। পুলিশ মা’রধর করে আরও অসুস্থ বানিয়ে ফেলেছে। জামিনে মুক্তির পর চিকিৎসক দেখালে বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু টাকার জন্য পরীক্ষা না করিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। বিনা চিকিৎসায় ভুগছেন তিনি।

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খলিল বন্দর উপজেলার একরামপুর এলাকায় ধনু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। শীতলক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫নং ঘাটের পেশাদার নৌকার মাঝি তিনি।

গত ৪ জুলাই এক কিশোরী নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হলে সদর থানায় মাম’লা করে তার পরিবার। পরে পুলিশ সেই মা’মলায় খলিল, আব্দুল্লাহ্ ও রকিব নামে তিনজনকে গ্রে’ফতার করে। পরে ৯ আগস্ট তারা ওই কিশোরীকে গ’ণধ’র্ষণের পর শ্বা’সরো’ধে হ’ত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে লা’শ ভাসিয়ে দেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই মা’মলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই শামীম আল মামুন।

এদিকে ঘটনার ৫১ দিন পর ২৩ অগাস্ট ওই কিশোরী পরিবারের কাছে জী’বিত ফিরে আসলে ব্যাপক তোলপাড় হয়। আদালতের নির্দেশে তিনি এখন তার পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন। ফিরে আসার পর কিশোরী আদালতে স্বীকারোক্তিতে বলেছে, ইকবাল নামের এক যুবককে বিয়ে করে বন্দর এলাকার এক ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি।

আলোচিত এ ঘটনায় নি’র্যাতন করে জবানবন্দি আদায় ও আ’সামিদের পরিবারের কাছ থেকে ঘু’ষ নেয়াসহ নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে মা’মলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মা’মলা দায়েরের জন্য সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। সূত্রঃ সময় টিভি

ad

পাঠকের মতামত