321889

জীবন বাঁ’চাতে রোজা ভে’ঙে অসহায় হিন্দু বৃদ্ধাকে র’ক্ত দিলেন মুসলিম গৃহবধূ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনার মধ্যেই দেখা গেল এক সম্প্রীতির ছবি। রোজা ভে’ঙে এক হিন্দু নারীকে র’ক্ত দিলেন মুসলিম গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাটে। জোৎস্না রায়, ৬০ বছর বয়স। বাড়ি ভারতের রানাঘাট থানার অন্তর্গত ডিসপেন্সারি লেনে।

তার স্বামী রবীন্দ্রনাথ রায় মা’রা গেছেন দু’বছর আগে। কয়েক মাস ধরে তিনি কিডনির রোগে আক্রা’ন্ত। মাসে তিন বার জোৎস্নাদেবীর ডায়ালাইসিস করতে হয়। দু’মাস আগে বাড়িতেই পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান।

ইদানিং জোৎস্নাদেবীর শরীরের অবস্থা যথেষ্টই সং’কটজনক হতে শুরু করে। রানাঘাটের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করানো হয় তাকে।

নার্সিং হোমে ভর্তি করার পরই চিকিৎসকরা জানান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জোৎস্না রায়কে র’ক্ত দিতে হবে। তার রক্তের গ্রুপ O+। করোনার জেরে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাঙ্কে র’ক্তের সং’কট। মায়ের র’ক্ত জোগাড় করতে গিয়ে হি’মশি’ম খেতে হয় জোৎস্নাদেবীর বিবাহিত মেয়ে বিশাখা পান্ডেকে। বিভিন্ন জায়গায় র’ক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে লকডাউনের সময় মায়ের জন্য র’ক্ত জোগাড় করতে পারেননি তার মেয়ে বিশাখা পান্ডে।

এই অবস্থায় একটি সংগঠনের সন্ধান পান জোৎস্নাদেবীর মেয়ে। রানাঘাটে এই সংগঠনটি তৈরি হয়েছে করোনা মো’কাবিলার জন্য। এই সংগঠনের কাজ হল করোনার সময় চিকিৎসা সং’ক্রান্ত সমস্ত ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করা। কোন জায়গায় র’ক্ত না পেয়ে ওই সংগঠনটির কাছে মায়ের 0+ র’ক্তের জন্য লিখিত আবেদন করেন জোৎস্নাদেবীর মেয়ে বিশাখা পান্ডে। সেই সংগঠনের এক সদস্য রুম্পা খোন্দকার।

বাড়ি রানাঘাট থানার কামারপাড়ায়। র’ক্তের জন্য মায়ের মত এক বৃদ্ধার প্রাণ সং’শয়। এটা জানতে পেরেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন রুম্পা খোন্দকার। তার র’ক্তের গ্রুপের সঙ্গে জোৎস্নাদেবীর র’ক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়াতে তিনি নিজেই র’ক্ত দিতে সম্মত হন।

গত ১৬ দিন ধরে রোজা করে আসছেন রূম্পা খোন্দকার। রোজা ভা’ঙতে আরও ১৪ দিন বাকি। কিন্তু ১৪ দিন বাকি থাকতেই রোজা ভে’ঙে সংকটজনক জোৎস্না রায়কে র’ক্ত দিলেন মুসলিম গৃহবধূ রুম্পা।

রানাঘাট হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই রক্ত দিতে দিতে রুম্পা জানান, ‘র’ক্তের রং একটাই লাল। মানুষের প্রাণ বাঁ’চাতে হিন্দু বা মুসলিম এই ভেদাভেদ করা উচিত নয়। রোজা আগামী বছরও করতে পারব। কিন্তু এক বোতল র’ক্ত দিয়ে এক মু’হূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁ’চিয়ে অনেক বেশি পূণ্য অর্জন করেছি।’

পাশাপাশি মায়ের প্রাণ বাঁ’চানোর পর রুম্পা খোন্দকারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জোৎস্না রায়ের মেয়ে বিশাখা পান্ডে জানান, ‘র’ক্তের কোন ধর্ম বা জাত হয় না। রুম্পা আজ সমাজের বুকে সেটা প্রমাণ করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এটা সব ধর্মের মানুষকে সঠিক দিশা দেখাবে।’

র’ক্ত দেয়ার পর জোৎস্নাদেবীর শারীরিক অবস্থা সামান্য স্থিতিশীল হলে বিপদমুক্ত নয়। তবে জোৎস্নাদেবীর দুই মেয়ের চেষ্টা যাতে বিফলে না যায় সেই প্রার্থনা করেছেন দুই পরিবারের সদস্যরা। উৎস: জি-নিউজ

ad

পাঠকের মতামত