297778

গর্ভে সন্তান নিয়ে স্ত্রীর দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন প্রেমিকার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর সদরের চৌধুরীকান্দা গ্রামে গর্ভে সন্তান নিয়ে স্ত্রীর দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছে স্কুলছাত্রী সাদিয়া আক্তার (১৫)। সে ওই গ্রামের হতদরিদ্র মোশারফ হোসেনের মেয়ে এবং সদরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

শুক্রবার সকাল থেকে সাদিয়া তার প্রেমিক লুৎফর তালুকদারের বাড়িতে অবস্থান নেয়। গত দুইদিন ধরে অনশন অবস্থায় স্ত্রীর মর্যাদা পেতে ঘরের মধ্যে আকুতি-মিনতি করে যাচ্ছে সাদিয়া। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) রবিউল ইসলাম ও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাঈদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্কুলছাত্রীর প্রাথমিকভাবে মেডিকেল চেকআপ করানো হয়। শনিবার সকালে প্রেমিক লুৎফর তালুকদারের বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা করে সাদিয়ার পরিবার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশুতোষ বলেন, মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের অভিনয় করে আসছিল ওই গ্রামের ছিদ্দিক তালুকদারের ছেলে লুৎফর তালুকদার (২৫)। লুৎফর তালুকদার বছর খানেক আগে ওই গ্রামের পাশের একটি মেয়েকে বিয়ে করে।

বিয়ের পরও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে লুৎফর। এতে করে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। বর্তমানে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে না পেরে স্কুলছাত্রী প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়। মামলা রেকর্ডের পর আমরা লুৎফরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। স্কুলছাত্রীকে রোববার সকালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেয়ার জন্য নেয়া হবে।

সাদিয়ার বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, দিনমজুরি করে চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম সংসার চলে আমার। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় টাকার জন্য মেয়েটিকে করিম জুট মিলে কাজ করতে পাঠাই। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে লুৎফর আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে। আমি আমার মেয়ের মর্যাদা রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই।

অনশনরত সাদিয়া জানায়, আমার সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রেম করে আসছে লুৎফর। আমার গর্ভে সন্তান রয়েছে বিষয়টি লুৎফর জানার পর আমাকে ঘরে তুলে নেবে এবং স্ত্রীর মর্যদা দেবে বলে কয়েক মাস ধরে ঘোরাচ্ছে। আমার সন্তান প্রসবের সময় হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি আমি পরিবারকে জানাই। আমার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে লুৎফর, আমি স্ত্রীর মযার্দা নিয়ে সমাজে বাঁচতে চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লুৎফর ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় উকিল মাতুব্বর বলেন, মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। ঘটনা সত্য হলে অবশ্যই এর একটা সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন।

ad

পাঠকের মতামত