289005

মোদির পক্ষই নিলেন ইমরান

ডেস্ক রিপোর্ট।। ভারতের লোকসভা নির্বাচন শুরুর ঠিক একদিন আগে অনেকটা আকস্মিকভাবে যেন কৌশল ও অবস্থান পরিবর্তন করল পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হঠাৎ করেই জানিয়েছেন, তিনি চান ভারতে নরেন্দ্র মোদির সরকার আবার ক্ষমতায় আসুক। কারণ মোদির দল বিজেপি জয়ী হলে কাশ্মীর ইস্যুতে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ভালো সুযোগ তৈরি হতে পারে। কিন্তু কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

ইমরানের মতে, ভারতের সঙ্গে তাদের শান্তি আলোচনার জন্য মোদিই বেশি সুবিধাজনক। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরান এমন কথা বলেন বলে খবর রয়টার্সের।

তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান বলেন, ডানপন্থি দল বিজেপি নির্বাচনে জয়ী হলে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে একটি সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। যদিও কাশ্মীরসহ ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলমানরা মোদির শাসনামলে নিগৃহের শিকার হয়েছে। ভারতে এখন যা ঘটছে, তা কখনো আমার ভাবনায় আসেনি। মুসলমান হওয়ার কারণে সেখানে অনেককে আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে। তার পরও মোদি আবার ক্ষমতায় এলে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হতে পারে।

ইমরান আরও বলেন, একসময় যে মুসলমানরা ভারতে সন্তুষ্ট ছিলেন, এখন তারাও উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থানে উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো মোদিও ‘ভয় ও জাতীয়তাবাদী অনুভূতিকে’ পুঁজি করে ভোটারদের কাছে টানতে চাইছেন? এ ক্ষেত্রে জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ একটি বিশেষ অধিকার কেড়ে নিতে চলতি সপ্তাহে ভারত সরকারের প্রস্তাবিত একটি বিলের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। গত কয়েক দশক ধরে কাশ্মীরের বাসিন্দা নন এমন কারও সেখানে জমি কেনার অধিকার ছিল না? এখন সেই নিয়মে পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে মোদি সরকার? তবে এটি ভোটারদের মন জয়ের ফন্দি হতে পারে বলেও মনে করেন ইমরান। ভারতকে শান্তির বার্তা দিতে এদিন সুনির্দিষ্ট ঘোষণাও দিয়েছেন ইমরান খান? তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানভিত্তিক সব জঙ্গিগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে তার সরকার বদ্ধপরিকর।

আর এ কাজে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও সরকারকে পুরোপুরি সমর্থন জোগাচ্ছে? কাশ্মীরে যেসব গ্রুপ সক্রিয় আছে, তাদেরও একইভাবে শেষ করে দেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদে রূপ নেওয়া এ প্রধানমন্ত্রী? এদিকে লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগ দিয়ে পাকিস্তানের সমর্থন নিয়ে ভারতে তোপের মুখে পড়েছেন মোদি। দেশটির বিরোধীদলীয় নেতারা এ নিয়ে মোদিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। কংগ্রেসের মুখপাত্র রন্দীপ সিং সুরুজওয়ালা এক টুইটে লিখেছেন- পাকিস্তান এখন সরকারিভাবে মোদির সঙ্গে জোট করেছে। মোদিকে ভোট দেওয়া মানে হবে পাকিস্তানকে ভোট দেওয়া। প্রথমে নওয়াজ শরিফ মোদির বন্ধু ছিলেন।

এখন ইমরান তার বন্ধু হয়েছেন- এই সত্যটি পৃথিবী জেনে গেল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ইমরান খানের এ বক্তব্যের পর এখন সবাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন। মোদিজি দয়া করে বলুন কেন ইমরান খান আপনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চাইছেন, আপনার সঙ্গে পাকিস্তানের কী সম্পর্ক? কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন- বিজেপিকে যারা হারাতে চায়, তারা পাকিস্তানের পক্ষে। অথচ এখন ইমরান খান সরাসরি মোদির দলের জয় চাইছেন।

ad

পাঠকের মতামত