271322

“ফাঁসিই দিন আর যাই করুন, যা সত্য তা বলবই।”

সুলতান আলাউদ্দিন খালজী তাঁর প্রধান কাজী (প্রধান বিচারপতি)- কে আহবান করলেন দরবারে। কাজী দরবারে এলেন। সুলতান জিজ্ঞেস করলেন, “দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের বিকলাংগ করে শাস্তি দেয়া যায় কিনা। ” কাজী রায় দিলেন, “এরূপ শাস্তি ইসলাম বিরুদ্ধ।” এই উত্তরে সুলতান মনক্ষুন্ন হলেন। তিনি আবার জানতে চাইলেন, “দেবগিরি থেকে আমি যে ধনসম্পদ লাভ করেছি, তা আমার না জন সাধারণের পাপ্য?” নির্ভীক কাজী উত্তর দিলেন, “ইসলামের সৈন্যবল দিয়ে তা অধিকৃত হয়েছে, সে সম্পদ আপনার হতে পারে না।

জনসাধারণের কোষাগারে তা অবিলম্বে জমা দেয়া উচিত।” সুলতান এবার আর ক্রোধ রাখতে পারলেন না। ক্রুদ্ধ ও বিরক্ত কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন, “জনসাধারণের কোষাগারে আমার ও আমার পুত্র-পরিজনদের অধিকার বা অংশ কতটুকু?” অবিচল কণ্ঠে কাজী উত্তর দিলেন, “ একজন সৈনিকের যতটুকু ততটুকু অংশ আপনার ও আপনার পুত্রের প্রাপ্য। আপনার খেয়াল খশীমত অর্থ যদি আপনি জনসাধারণের কোষাগার থেকে ব্যয় করেন, তাহলে এর জন্য মহা বিচারের দিন আপনাকে আল্লাহর কাছে জবাব দিহি করতে হবে।” কাজীর কথায় সুলতহান ভীষণ রেগে গেলেন। চরম শাস্তি দেবেন বলে সুলতাম তাঁকে শাসালেন।

অকম্পিত কণ্ঠে কাজী বললেন, “ফাঁসিই দিন আর যাই করুন, যা সত্য তা বলবই।” উপস্থিত সকলেই কাজীর ভবষ্যত ভেবে শংকিত হয়ে পড়ল। পরদিন কাজী দরবারে হাজির হলেন। সুলতান কাজীকে সসম্মানে গ্রহণ করলেন দরবারে। বহু মূল্যবান উপঢৌকন দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করলেন। নির্মম হলেও আলাউদ্দিন খালজীর সত্যগ্রহণ করার সাহস ছিল। তাঁর বাহুবলেল সাথে এই সত্য-প্রীতি যুক্ত ছিল বলেই তাঁর একচ্ছত্র প্রভাব সিন্ধু নদ থেকে রামেশ্বরমের সেতু পর্যন্ত ছাড়িয়ে পড়েছিল।

ad

পাঠকের মতামত