234264

পীরের আদেশে ভোট থেকে বিরত ৪৭ বছর

চাঁদপুরের রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের নারীরা ভোট দেন না। স্থানীয় এক পীরের নির্দেশই এর কারণ বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই পীরের ধারণা, মেয়েদের ভোট দেওয়া ইসলামবিরোধী কাজ।স্থানীয়রা জানান, ৪৭ বছর ধরেই এই চিত্র চলে আসছে ওই ইউনিয়নে। স্থানীয় প্রশাসন বহু চেষ্টা করেও নারীদের ভোটকেন্দ্রে আনতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি। এমনকি যারা শিক্ষিত, তারাও আসেন না জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে।রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৪ হাজার ৪৫৪ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন ১২ হাজার ১১৪ জন। তারা সবাই তালিকায় নাম তুলতে ছবি তুলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রও নিয়েছেন।

ভোট না দিলে নিত্যদিন ঘরের বাইরে যান নারীরা। নিজ এবং সন্তানের লেখাপড়া, বাজার ছাড়াও নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। কিন্তু ভোটের দিন সবাই থাকেন ঘরের ভেতরে।১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর জৈনপুরের পীরের অনুসারী হাছান মওদুদ নামে স্থানীয় একজন পীর এই ফতোয়া জারি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তিনি দাবি করেন, মেয়েদের ভোট দেওয়া নাজায়েজ কাজ। এরপর ১০টি সংসদ নির্বাচন আর কোনো স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেননি নারীরা।এবারও জাতীয় নির্বাচনে এই ইউনিয়নের নারীরা ভোট দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। যদিও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসকান্দার আলী আশা করছেন, এবার পরিস্থিতি পাল্টাবে। তিনি বলেন, ‘একটি গুজব উঠেছিল, তবে সমস্ত ব্যাপার সমাপ্ত হয়ে গেছে। এখন মহিলারা আসবে এবং ভোট দেবে।’

ফতোয়া জারি করা পীর হাছান অবশ্য বেঁচে নেই। তিনি পাঁচ বছর আগেই মারা গেছেন। আর এ কারণে এবার নারীদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যাপারে আশাবাদী স্থানীয় প্রশাসন।নারী ভোটারদের ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মাকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই নির্বাচনে নারী ভোটারসহ সবাই যাতে ভোটকেন্দ্রে যান, সে জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এবং তার প্রতিনিধি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আমাদের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।’

ad

পাঠকের মতামত