183001

‘হ্যাঁ আমি চা বিক্রি করতাম, কিন্তু দেশ বিক্রি করিনি’

আগামী ৯ এবং ১৪ ডিসেম্বর গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আগামী ২ সপ্তাহে তিনি ৩০টিরও বেশি নির্বাচনী সভা করবেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর। এ দিন ভুজ ছাড়াও আরও দু’টি জায়গায় মোদির নির্বাচনী সভা হয়েছে। তার একটি সৌরাষ্ট্রে এবং অন্যটি দক্ষিণ গুজরাটে। সোমবার সকালে কচ্ছের ‘আশাপুরা মাতা’ মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচারাভিযান শুরু করেন।

এর আগে কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী গুজরাটে একাধিকবার প্রচারে এসেছেন। নানা বিষয়ে মোদিকে তিনি আক্রমণ করেছেন। এ দিন মোদি নিজের ইনিংস-এর শুরুতেই সেই রাহুলকে জবাব দিতে চেয়েছেন। গুজরাট নির্বাচনের আগে রাহুলকে তাঁর দল যে সভাপতি পদে নির্বাচিত করছে, তা নিয়েও মোদি কটাক্ষ করেছেন। তাঁর মতে, এ বারের লড়াই ‘উন্নয়ন বনাম পরিবার তন্ত্রের’ লড়াই। ‘চা-ওয়ালা’ কটাক্ষের জবাব এদিন দিয়েছেন মোদি।

সৌরাষ্ট্রের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি চা বিক্রি করতাম। কিন্তু, দেশকে বিক্রি করিনি।’’ এর পরেই মোদির বার্তা, ‘‘এভাবে আমার দারিদ্র নিয়ে কটাক্ষ করবেন না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আসলে কংগ্রেস আমাকে অপছন্দ করে। কী ভাবে একটা দল এতটা নিচে নামতে পারে? হ্যাঁ, দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে আমার মতো একজন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এ জন্য কিছু গোপন করার নেই।’’

ফের কমতে পারে পিএফের সুদের হার, আশঙ্কায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ। এ দিন মোদির ভুজের জনসভায় বিপুল জনসমাগম হয়। সেখানে তিনি মুম্বাই এবং উরি হামলা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘২৬/১১-য় এবং উরিতে ভারতের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। আপনারা দেখেছেন দু’টি ক্ষেত্রে ভারত কীভাবে তার জবাব দিয়েছে। আর সেটাই বুঝিয়ে দেয়, ওদের সরকার এবং আমাদের সরকারের পার্থক্য।’’

উচ্চারণ না করেও মোদী মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে ভারতীয় সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা।

আসলে, মোদি জবাবটা দিতে চেয়েছেন রাহুল গাঁধীকে। কারণটা অবশ্যই মুম্বাই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সাইদ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি হাফিজকে গৃহবন্দি করেছিল পাক সরকার। গত বুধবার তাকে মুক্তি দিয়েছে লাহৌর হাইকোর্টের বিচারবিভাগীয় বোর্ড। শুক্রবার লাহৌরের বাড়ি থেকে বাইরে পা দিয়েছেন এই জঙ্গি নেতা।
তারপরেই রাহুল গাঁধী টুইট করে ব্যঙ্গ করেন, ‘‘নরেন্দ্র ভাই বাত নেহি বনি। টেরর মাস্টারমাইন্ড এখন ফ্রি। ‘হাগপ্লোম্যাসি’ ফেল করল। আরও আলিঙ্গনের প্রয়োজন রয়েছে।’’

এ দিন মোদি এই বার্তারই জবাব দিতে চেয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি ভারতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রাহুলের দেখা করা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন। ভুজের জনসভায় মোদি গুজরাতি ভাষাতেই ভাষণ দিচ্ছিলেন। সেই ভাষণই ইংরেজি তর্জমা করে তাঁর টুইটার হ্যান্ডলে পোস্ট করা হচ্ছিল। সেখানে মোদি বলেন, ‘‘পাকিস্তানি আদালত এক জঙ্গিকে মুক্তি দিয়েছে, আর কংগ্রেস তা উদ্‌যাপন করছে। অবাক হয়েছিলাম, কেন! এই কংগ্রেসেই তো সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে আমাদের সেনার উপর বিশ্বাস রাখতে চায়নি। বরং তার থেকে বেশি বিশ্বাস করতে চেয়েছিল চিনের রাষ্ট্রদূতের উপর।’’

রাহুলের ‘হাগপ্লোম্যাসি’ জবাবে মোদি বলেন, ‘‘ডোকলামে যখন ৭০ দিন চিনা সেনার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে টক্কর দিচ্ছিল ভারতীয় সেনা, তখন চিনের রাষ্ট্রদূতকে আলিঙ্গন করেছিলেন কেন!’’ ২০০১ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মোদি। সে বছর কেশুভাই পটেলকে সরিয়ে মোদিকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। ছ’মাসের মধ্যে মোদিকে মণিনগর থেকে উপনির্বাচনে জিতিয়ে আনা হয়েছিল। তারপর থেকে ২০১৪ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগ অবধি এই গুজরাটেরই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

ad

পাঠকের মতামত