
সামি-মুস্তাফিজদের বোলিং দাপটে উড়ে গেল কুমিল্লা
শুরুর বিপর্যয়ের পর ভালোভাবেই দলের হাল ধরেছিলেন কুমিল্লা অধিনায়ক তামিম ইকবাল আর শোয়েব মালিক। ঘরের ছেলে তামিমের হাফ সেঞ্চুরিও দেখেন গ্যালারি ভর্তি দর্শকরা।
কিন্তু তামিম আউট হওয়ার পরেই ছন্দপতন। পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামির দাপুটে বোলিংয়ে ধসে পড়ে কুমিল্লার ব্যাটিং লাইনআপ। রাজশাহী কিংস ম্যাচ জিতে নেয় ৩০ রানে। এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা মুস্তাফিজও কম যাননি। ৩২ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের দূর্গে প্রথম আঘাত হানেন মোহাম্মদ সামি। দলীয় ৩ রানের মাথায় দারুণ এক বলে তার জাতীয় দলের সতীর্থ ফখর জামানকে (২) বোল্ড করে দেন। স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হতে না হতেই এবার মেহেদী মিরাজ ঘূর্ণিতে বোকা বানান গোটা টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ খেলে আসা ইমরুল কায়েসকে (০)। মহাবিপদে পড়ে যায় কুমিল্লা।
সেই মুহূর্তে শোয়েব মালিককে নিয়ে দলকে পথ দেখান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কুমিল্লার অধিনায়ক হলেও চট্টগ্রামের ছেলের খেলা দেখতে গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
তাদের নিরাশ করেননি তামিম। দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরির পর ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ৩ ওভার বাউন্ডারিতে ৬৩ রানে আউট হন। আর ২৬ বলে ৪৫ রান করা শোয়েব মালিককে কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন রাজশাহী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। মোহাম্মদ সামির তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন অলক কাপালি (০)। এক বল পরেই সাইফ উদ্দিনকে ০ রানে প্যাভিলিয়নে পাঠান এই পাকিস্তানি পেসার। কার্যত ধস নামে কুমিল্লার ব্যাটিং লাইনআপে। ইংলিশ তারকা জশ বাটলারকে (১৫) এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ফ্র্যাংকলিন।
রাজশাহীর জয় তখন কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ৭ বলে ২ ছক্কায় ১৬ রান করে জমানোর চেষ্টা করেছিলেন হাসান আলী। তবে ইনজুরি থেকে ফেরা মুস্তাফিজ তাকে প্যাভিলিয়েন ফেরত পাঠান। রশিদ খানকে ডোয়াইন স্মিথ আর মেহেদী হাসানকে মুস্তাফিজ দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করলে ১৫৫ রানে থেমে যায় কুমিল্লার ইনিংস। তলানিতে থাকা রাজশাহী জয় পায় ৩০ রানে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম খেলায় টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৮৫ রান তোলে ড্যারেন স্যামির দল রাজশাহী। দুই ওপেনার ডোয়াইন স্মিথ এবং মুমিনুল হক দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। ৪৩ রানের জুটি গড়ার পর স্মিথকে (১৯) বোল্ড করে দেন তরুণ পেসার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ১৬ বলে ২৩ রান করা মুমিনুল হক অলক কাপালীর অসাধারণ এক থ্রোতে রান-আউট হয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
রাজশাহীর ইনিংসে তৃতীয় আঘাত হানেন আল-আমিন হোসেন। জাকির হাসানকে ব্যক্তিগত ১৩ রানে কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন তিনি। এরপর আবারও সাইফ উদ্দিনের আঘাত। ইমরুল কায়েসের তালুবন্দী হয়ে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম (৮)। এবারের আসরে মুশফিকের ব্যাট যেন কথাই বলছে না। সাইফ উদ্দিনের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে তিন নম্বরে নামা লুক রাইট ৩৬ বলে ৪২ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দেন।
হাসান আলীর বলে ফ্র্যাংকলিন (১৪) এলবিডাব্লিউ হয়ে যাওয়ার পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক ‘ডিজে স্যামি’। তিনি উইকেটে আসতেই শুরু হয় ক্যারিবীয় ব্যাটিং ঝড়। আঁটসাটো বোলিংয়ে ম্যাচের নিয়নত্রণ রাখা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস বোলাদের তুলাধুনা করে ছাড়েন তিনি্ ১৪ বলে ১ চার ৬ ছক্কায় অপরাজিত ৪৭ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। নির্ধারিত ২০ ওভারে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৮৫ রান।