‘প্রতি সপ্তাহে মেয়েদের হাটে তোলা হতো বিয়ের জন্য’
১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল, তাতে বহু মানুষ মারা যায়। একটা প্রজন্ম হারিয়েছি আমরা। ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের জেলায় অল্প কিছু পুরুষ লোক বেঁচে ছিল। মহিলা আর শিশু ছিল না কোন।
মুরব্বিদের কাছে শুনেছি, মহিলাদের যোগান দেয়ার জন্য সপ্তাহে একদিন হাট হতো, সেখানে আশপাশের এলাকা থেকে মেয়েদের নিয়ে আসা হতো। হাটে আনা মেয়েদের সাথে এখানকার পুরুষদের বিবাহ দেয়া হতো। কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা ভোলার চর কুঁকড়িমুকড়ি-র চেয়ারম্যান হাশেম মহাজন।
তিনি বলছিলেন, “সেকারণে ঘূর্ণিঝড় বিষয়টি আমাদের জন্য একটা অভিশাপ বলে মনে করি আমরা উপকূলের মানুষেরা।” ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর যে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল, তাতে মারা গিয়েছিল উপকূলীয় এলাকার অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষ।
হাশেম মহাজন বলছিলেন, ১৯৭০ সালের তুলনায় এখন ঘূর্ণিঝড়ের মত বড় দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি বেড়েছে। সিগন্যাল শুনে বা গণমাধ্যম থেকে, বিশেষ করে এখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও সতর্কতা সম্পর্কে জেনে আগাম প্রস্তুতি নেয় মানুষ।
তবে, ঘূর্ণিঝড় বা দুর্যোগের আগাম বার্তা পাবার ব্যবস্থা এখনো অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সাথে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবার ক্ষেত্রে এখনো স্থানীয় মানুষদের মধ্যে অনীহার রয়েছে। কেবল সচেতনতার অভাবে মানুষ ভিটেমাটি, গবাদি পশু ছেড়ে যেতে চায় না।
বাংলাদেশে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের সুরক্ষার লক্ষ্যকে সামনে রেখে আজ প্রথমবারের মত ১২ই নভেম্বরকে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে পালন করছে বেসরকারি কয়েকটি সংগঠন। ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, ফেনীসহ উপকূলবর্তী ১৫টি জেলার ৩২টি উপজেলায় আজ এ নিয়ে নানা ধরনের কর্মসূচী পালন করা হবে। বিবিসি