179878

যে কারণে মেয়ের শ্বশুর ও পরকীয়া প্রেমিককে সাথে নিয়ে স্বামীকে খুন করলো স্ত্রী

কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট ইউনিয়নের ছুপুয়া গ্রামে আমেরিকা প্রবাসী রকিব উদ্দিনের প্রায় পরিত্যক্ত একটি বাড়ি থেকে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় মাটিতে পুঁতে রাখা একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এই মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায় স্ত্রীর পরকীয়ার কথা। জানা যায়, পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে নিজের স্ত্রী সাজেদা বেগম মেয়ের শ্বশুর ও পরকীয়া প্রেমিক তাজুকে সঙ্গে নিয়ে খুন করেন স্বামীকে।

এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৩ জনকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে। আটককৃতরা হলেন- নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম (৪০), ছেলে ঈস্রাফিল হোসেন (১২), স্ত্রীর ভাগিনা পেয়ার আহাম্মদ (৩৫)।

স্থানীয় সূত্র মতে, দীর্ঘ ২৮ বছরের প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২ বছর পূর্বে দেশে ফিরে আসেন প্রবাসী খোরশেদ আলম (৫৫)। স্বামী প্রবাস থাকার সুযোগে একই গ্রামের তাজুল ইসলামের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়ায় স্ত্রী সাজেদা বেগম (৪৫)। পরকীয়ার প্রেমিকের মন খুশি রাখতে স্বামীর উপার্জিত বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ধার দেয় প্রেমিক তাজুকে।

স্বামী বাড়ী আসার সময় হয়েছে জানিয়ে টাকা ফেরত চায় সাজেদা। কিন্তু টাকা দিতে নারাজ তাজু। স্বামীকে টাকার হিসেব দেয়ার উপায় খোঁজে। কিন্তু চোখের সামনে শুধুই অন্ধকার। রাতের অভিসারে দু’জনে মিলে ফন্দি আঁটে।

তাদের আরো ঘনিষ্ট হতে খোরশেদের মেঝো মেয়ে রশিদাকে বিয়ে দিবেন তাজুর ছেলে ওমর ফারুকের সাথে। এভাবেই তাজু হাতিয়ে নেয় ১৭ লক্ষ টাকা। খোরশেদ বাড়ীতে এসে উপার্জিত টাকার হিসেব পায়না।

এ নিয়ে পরিবারে কলহ চলছে। একই সাথে তাজুর পাওনা টাকা আদায়ে দেন দরবারও চলছে। সর্বশেষ গ্রামের সালিশদাররা মিলে আগামী ১৭ নভেম্বর শালিস বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেছিল। পরিণামে লাশ হতে হয় খোরশেদ।

এদিকে, খুনিদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তামূলক শাস্তির দাবীতে স্থানীয় এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে হত্যার ঘটনা ফাঁস হওয়ার সাথে সাথে পরকীয়া নাগর তাজুল ইসলাম ও মেয়ে মুরশিদা বেগম গা ঢাকা দেন। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য একরাম ও সালেহ আহম্মদ জানায়, ‘নিহত খোরশেদ আলমের সাথে তার মেয়ে রশিদার শশুর একই গ্রামের মৃত. যৌবন আলীর পুত্র তাজুল ইসলামের সাথে ১৭ লক্ষ টাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।

এছাড়াও সাজেদা ও তাজুর মধ্যে অনেক বছর ধওে পরকীয়া চলছিল। আগামী ১৭ নভেম্বর স্থানীয়ভাবে বিষযটি মিমাংসা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মীমাংসার আগেই তিনি খুন হয়ে গেলেন।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ূব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

ad

পাঠকের মতামত