গৃহকর্মীকে রান্নাঘরে আটকে যেভাবে খুন করলেন মা-ছেলেকে
রাজধানী ঢাকার কাকরাইলে গৃহকর্মীকে রান্নাঘরে আটকে রেখে মা শামসুন্নাহার করিম (৪৬) ও ছেলে শাওনকে (১৭) হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার সময় শামসুন্নাহারের স্বামী বাড়ির মালিক আবদুল করিম বাসায় ছিলেন না।
বুধবার বিকেলে কাকরাইলের রাজমণি-ইশা খাঁ হোটেলের বিপরীত পাশের গলির ৭৯/১, মায়াকানন বাসার পাঁচতলায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটনা ঘটে। গৃহকর্মী রাশেদা বেগম (৫০) জানান, বিকেলে ওই বাসায় কাজ করতে আসেন তিনি। এসেই রান্না ঘরে গিয়ে থালা-বাসন ধোয়ার কাজে লেগে যান। এ সময় কেউ একজন এসে রান্নাঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেয়।
তিনি বলেন, কিছুক্ষণ পর খালাম্মার (শামসুন্নাহার) ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুনতে পাই। পরে বাড়ির দারোয়ান নোমান এসে দরজা খুলে দিলে তাদের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পাই।
দারোয়ান নোমান জানান, সিঁড়ি দিয়ে এক ব্যক্তি নিচে নামার সময় বলেন- গিয়ে দেখেন পাঁচতলায় কোনো ঝামেলা হচ্ছে। তখন উপরে এসে দুজনের লাশ দেখতে পাই।
পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রেখেছেন। ঘটনাস্থলে কাজ করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘ঘরের ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় এক নারী পড়েছিলেন। আর সিঁড়িতে পড়ে ছিলেন ১৯-২০ বছর বয়সী এক তরুণ। আমরা জেনেছি- তারা সম্পর্কে মা-ছেলে। মরদেহগুলো উপুড় হয়ে পড়ে থাকায় প্রাথমিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন না পেলেও শরীর রক্তাক্ত দেখেছি।’
তিনি বলেন, গৃহকর্মী ও দারোয়ানসহ কয়েকজনকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে নিহতের স্বামীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
জানা গেছে, আবদুল করিম ও শামসুন্নাহার দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে নিহত শাওন সবার ছোট। তাদের বড় দুই ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। রাজধানীর শ্যামবাজারে আবদুল করিমের ব্যবসা রয়েছে। ঘটনার সময় তিনি সেখানেই ছিলেন। এছাড়া সম্প্রতি চলচ্চিত্র নির্মাণেও বিনিয়োগ করে আসছেন আবদুল করিম।