অবশেষে উত্তর মিললো; যে কারণে ক্রিকেটাররা এত কম বয়সে বিয়ে করে!
‘ব্যাপারটা বলা মুশকিল,’ বলেই কিছুটা থেমে গেলেন হাবিবুল বাশার। তাসকিনদের মতো অত তাড়াতাড়ি তিনি বিয়ের আসরে না বসলেও বয়সটা খুব বেশি ছিল না, ২৫। নিজের অভিজ্ঞতা আর উত্তরসূরিদের দেখে বাশার তবু একটা উত্তর দিতে চাইলেন, যার সারমর্ম ‘দায়িত্ববোধ’।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বিয়ের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় প্রায় সবাই কম বয়সে বিয়ে করেছেন। ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বয়স এখন ৩৪। তিনি বিয়ে করেন ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে। সেই হিসেবে বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ২৩। মঙ্গলবার জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করা তাসকিনের বয়স ২২। হাবিবুল বাশারের মতো সাকিবও বিয়ে করেন ২৫ বছরে।
‘বিয়ে করলে দায়িত্ববোধ বাড়ে। বিষয়টা আসলে সবার ব্যক্তিগত ব্যাপার। বিয়ের পরে শৃঙ্খলাও বাড়ে। তবে ব্যাপারটা এমন নয় যে বিয়ের আগে তারা উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করতেন,’ চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে আলাপকালে বলছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার।
‘স্ত্রীর সঙ্গে সোহান’
শুধু সাকিব, তাসকিনরা নন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২৫ বছরে), তামিম ইকবাল (২৪ বছরে), নুরুল হাসান সোহানরাও (২৩ বছরে) কম বয়সে নতুন জীবনে পা রাখেন। মুশফিক আর ইমরুল অবশ্য একটু দেরি করে বিয়ে করেন। মুশফিক বিয়ে করেন ২৭ বছর বয়সে, ইমরুল ২৬ বছরে।
‘স্ত্রীর সঙ্গে তামিম’
প্রেম, বিয়ে নিয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সাম্প্রতিক ইতিহাস খুব একটা ভালো নয়। পেসার রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ শহীদ, স্পিনার আরাফাত সানি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন। একবার বিপিএলের সময় আরও কয়েকজন ক্রিকেটারকে নিয়ে নারী কেলেঙ্কারির খবর চাউর হয়। বিষয়গুলো নিয়ে বিসিবি বারবার বিব্রত হওয়ার কথা জানায়। লোক জানাজানির আগে অনেক চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের পথে আনতে ব্যর্থ হয় বিসিবি। মোহাম্মদ শহীদ এখনও দ্বিতীয় বিয়ের পথ খুঁজছেন!
সাকিব ও শিশির’
ক্রিকেটারদের দ্রুত বিয়ের পেছনে এসব একটি কারণ বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানী মাহবুব আলম: ‘ক্রিকেটারদের মানুষ এখন অন্য চোখে দেখে। আমাদের সমাজব্যবস্থায় এটা অনেক কিছু। আর্থিক দিক থেকেও অল্প বয়সে তারা এগিয়ে যায়। সব মিলিয়ে পৃথিবীটা তাদের কাছে রঙিন মনে হতে থাকে। কেউ কেউ এসব কারণে পথও হারায়। অভিভাবকদের চিন্তা বাড়ে। তাই তারকা ছেলে বিয়ে করতে চাইলে অনেক সময় তারা আটকান না।’
‘স্ত্রীর সঙ্গে মাশরাফী’
তবে এটাই একমাত্র কারণ নয় বলেও স্মরণ করিয়ে দেন মাহবুব আলম, ‘আধুনিক যুগে ক্রিকেটারদের বান্ধবী থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সম্পর্কের দিনগুলোতে মেয়েটি অনিশ্চয়তায় ভুগতে পারেন। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটার তাকে বিয়ে করবেন কি না, এমন চিন্তা থাকতে পারে। সঙ্গত কারণে তার পরিবার থেকেও বিয়ের চাপ আসতে থাকে। সেই চাপ গিয়ে পড়ে ক্রিকেটারের ওপর। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন হওয়া স্বাভাবিক। তাই ক্রিকেটারকেও দ্রুত সবকিছু করতে হয়।’
/চ্যানেল আই