179086

মাঝেমধ্যে ঘরে তালা দিয়েও রাখতে হতো: তাসকিনের মা

বাংলাদেশের জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আইসিসি। তারপর অনেক দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেননি তাসকিন।

অবশেষে খেলায় ফিরে এসেছে তাসকিন। মা সাবিনা ইয়াসমিন রুপা ছিলেন ছেলের সংগ্রামী দিনগুলোর সঙ্গী। তাহলে শুনুন সেই দিনগুলির কথা:

মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডে ছয়তলা একটি ভবন। ভবনের সামনে একটি ল্যাম্পপোস্ট। ভবনের দোতলায় তাসকিনদের বাসা।

দুষ্টু-মিষ্টি শৈশব
তাসকিনের মা বললেন, মাঝেমধ্যে ঘরে তালা দিয়েও রাখতে হতো। নইলে তাসকিন রোদের মধ্যেই খেলতে চলে যেত।

ঘরে থাকলে কিছুক্ষণ পরপরই ঘড়ি দেখত। কখন বাজবে ৪টা! ৪টা বাজলেই বল নিয়ে দে ছুট। তাসকিন তখন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। রোদে খেলছিল বলে বাবা তাকে পেটাতে পেটাতে বাসায় নিয়ে আসেন।

ছেলের কষ্ট মা সইতে না পেরে কেঁদে ফেলেন। তবে শতগুণ কষ্ট পেয়েছিলেন যেদিন তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আইসিসি। দূরে সরিয়ে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে।

ঠিক ওই দিনটির কথা বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব। হল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা শেষ করে রাতে বাবাকে ফোন করেছিলেন তাসকিন। ছেলের গলা শুনেই বাবা বুঝেছিলেন ছেলের মন খারাপ।

প্রথমে কিছু বলতে চাননি। পরে বললেন, ‘আমার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়ার সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ’

বাবা আতঙ্কিত হলেও সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এই বলে, ‘তুমি ভেব না, প্রমাণ তো হয়নি, শুধুই সন্দেহ। ’ সারা রাত অস্থির ছিলেন বাবা। মা বারবার জানতে চেয়েও সদুত্তর পাননি। তবে সকালে আর বিষয়টি গোপন রাখতে পারেননি বাবা।

বললেন, একটা খারাপ খবর আছে, সন্দেহ প্রকাশ করেছে আম্পায়ার। এবার পরীক্ষা দিতে হবে তাসকিনকে।

ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত খেলতে পারবে না তাসকিন। বাকরুদ্ধ হলেন রুপা। কান্নায় ভেঙে পড়লেন। বারবার তাসকিনের সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন।

দুঃখের দিনের কথা বলতে বলতে সাবিনা ইয়াসমিনের গলা ধরে এলো। কান্না চাপতেই বুঝি উঠে গেলেন। তবে ফিরে এলেন হাতে নাশতার প্লেট নিয়ে।

ad

পাঠকের মতামত