শহীদ মিনার থেকে ৪ দফা দাবি, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
নিউজ ডেস্ক।। ‘দ্রোহযাত্রা’ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে চার দফা দাবিসহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্র-শিক্ষক-জনতা। আগামী রবিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
আজ বিকেল ৫টার দিকে ছাত্র-জনতার পক্ষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সমাজকর্মীডা. হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের কথা খুব পরিষ্কার। অবিলম্বে শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আটক সব ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দিতে হবে। কারণ আপনারা সরকার পরিচালনায় অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। আর আপনারা পদত্যাগ করতে ব্যর্থ হলে আমাদের ইতিহাসে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। নাহলে আপনাদেরও একই পরিণতি হবে।’
একই ঘোষণা দেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম। তিনি বলেন, গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে, গ্রেপ্তার সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। রবিবারের মধ্যে কারফিউ তুলে নিতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। রবিবারের মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এসব দাবি পূরণ না হলে রবিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু হবে।
এর আগে আজ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গণগ্রেপ্তার বন্ধ, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার, আটক শিক্ষার্থী-জনতার মুক্তি, কারফিউ প্রত্যাহার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও অসংখ্য শিক্ষার্থী জনতাকে হত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ‘দ্রোহযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্মসূচিতে ছাত্র-শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশ নিতে বলা হয়।
আজ দুপুর ২টার পর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দ্রোহযাত্রা’য় অংশ নিতে জড়ো হন হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রেসক্লাবের সামনে ‘দ্রোহযাত্রা’য় অংশ নেওয়ারা বিভিন্ন প্রতিবাদী গান ও কবিতা পরিবেশন করেন।
এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রেসক্লাব থেকে হাইকোর্টের মাজারগেট হয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর দিয়ে শহীদ মিনারে পৌঁছায় মিছিলটি। এ সময় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
অন্যদিকে, বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের দিকে বুয়েট থেকে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন শিক্ষার্থীরা।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মিছিলকারীদের ‘এক দুই তিন চার, শেখ হাসিনা গদি ছাড়’, ‘হই হই রই রই, ছাত্রলীগ গেল কই, ‘শেখ হাসিনা স্বৈরাচার, এই মুহূর্তে গদি ছাড়’, ‘আমরা ভাই মরল কেন? শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘গুলি করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘লড়াই লড়াই, লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক, ‘শেখ হাসিনার গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ ছাড়া শহীদ মিনারে অংশ নেওয়া অনেকে প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন, অনেকে করেন কবিতা আবৃত্তি। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।