ডিবি প্রধানের কাছে সোহেল তাজের ৩ প্রশ্ন
ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। এসময় ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে তিনটি প্রশ্ন জানতে চান তিনি।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে যান তিনি। প্রায় দেড় ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তিনি। কিন্তু সমন্বয়কদের সাথে দেখা করতে পারেননি তিনি।
ডিবি কার্যালয় থেকে সন্ধ্যায় বের হয়ে ডিবি কার্যালয়ের গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিবেকের তাড়নায়, সাধারণ নাগরিক হিসেবে সমন্বয়কদের সঙ্গে দেখা করতে ডিবিতে এসেছি।
এ সময় সোহেল তাজ ডিবি প্রধান হারুনের কাছে তিনটি প্রশ্ন জানতে চান। তার প্রথম প্রশ্ন- যে ছয়জন সমন্বয়ককে আনা হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার নাকি সেইভ কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন- যদি গ্রেপ্তার হয়ে থাকে তাহলে আমার কোনো প্রশ্ন নেই, দাবি নেই। যদি সেইভ কাস্টডিতে নেওয়া হয় তবে আমি দেখা করতে চাই। তৃতীয় প্রশ্ন- তাদের সেইভ কাস্টডি থেকে কখন মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু তার কোনো প্রশ্নেরই সন্তোষজনক জবাব পাননি সোহেল তাজ।
সোহেল তাজ বলেন, ‘এ সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কথা বলে ডিবিপ্রধান জানান, ছয়জন সমন্বয়ক যেহেতু তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন সেহেতু সেইভ কাস্টগিতে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করি ছয় সমন্বয়ক তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কীভাবে উদ্বিগ্ন? তারা (সমন্বয়ক) কি আপনাদের জানিয়েছিলেন? ডিবিপ্রধান জবাবে জানান, তাদের মনিটরিং করে বুঝতে পেরেছেন সমন্বয়করা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরপর আমি ছয় সমন্বয়কের সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেই ডিবিপ্রধানকে। আমাকে জানানো হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পারমিশন নিয়ে আমাকে তাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে।
ডিবি কার্যালয়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে সোহেল তাজ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে দেশে অশান্তি বিরাজ করছে। এখানে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। নিরীহ পাঁচ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে ৮–১৬ বছরের ছাত্র, সাধারণ মানুষসহ অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এটা আমাদের সবাইকে আহত করেছে। আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এই বিবেকের কারণেই ব্যক্তিগতভাবে ডিবি অফিসে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘এই ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কিছুই নয়। ক্ষয়ক্ষতি কোনো বিষয় নয়। যে সম্পদ ধ্বংস হয়েছে, সেগুলো তো জনগণের করের টাকায় করা হয়েছে। এগুলো জনগণের সম্পদ। এগুলো হয়তো ভবিষ্যতে আবার গড়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু একটি প্রাণ যেটা আমরা হারিয়েছি, একটি প্রাণও কি আমরা ফেরত পাব? এই প্রাণ কি ফিরে আসবে? আমাদের মনে রাখতে হবে, মুখ্য জিনিসটা কী? প্রাণের মূল্য কিন্তু কোটি কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি।’ চ্যানেল আই অনলাইন