363567

রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, ক্লিনিক মালিক কারাগারে

নিউজ ডেস্ক।। বাঁচেনা খাতুন নামে এক রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের অভিযোগের মামলায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাজা ক্লিনিকের মালিক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তারিক হাসান এ আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গৃহবধূ বাঁচেনা খাতুন পিত্তথলির অপারেশন করেন গাংনীর রাজা ক্লিনিকে। বাঁচেনা খাতুনের অপারেশন করেন চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার।

অপারেশনের এক সপ্তাহ পর বাঁচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপরেও পেটের ব্যথা ভালো না হওয়ায় ২০ বছর ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ঘুরেছেন তিনি। অবশেষে গত ২ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে করানোর সময় তার পেটে পাওয়া যায় অপারেশনকালে ডাক্তারের রেখে দেওয়া কাঁচি।

এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজার শরাণাপন্ন হলে তিনি বাঁচেনা খাতুনকে অপারেশন করার পরামর্শ দেন এবং চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে দীর্ঘ ২০ বছর পর রোগীর পেটে থাকা কাঁচি অপারেশনের মাধ্যমে বের করা হয়।

এ ঘটনায় আমলী আদালত গাংনী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলাম স্বপ্রণোদিত হয়ে ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন এবং মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়।

অপরদিকে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুয়ারি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি মো. ফজলুর রহমান, মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি চিকিৎসক মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামি করে প্রতিবেদন জমা দেয়। মামলার অপর আসামি হলেন অ্যানেস্থেসিয়া ডা. তাপস কুমার।

 

ad

পাঠকের মতামত