363503

বিয়ে করতে ঠাকুরগাঁওয়ে ইতালির যুবক

নিউজ ডেস্ক।। ইতালি থেকে বিয়ে করতে আলি সান্দ্র চিয়ারো মিনতে নামে ৩৯ বছরের এক যুবক এসেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। সোমবার রাতে রত্না রানী দাসের (১৯) সঙ্গে তার সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

রত্না রানী দাস বালিয়াডাঙ্গীর চাড়োল ইউনিয়নের খোকোপাড়া গ্রামের দিনমজুর মারকুস দাসের মেয়ে। বর ইতালিতে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে রত্না রানী দাসের বাবা মারকুস দাস জানান, জোসেফ দাশ নামে আমার এক ভাই পরিবারসহ ইতালিতে বসবাস করছেন। আমার ভাই জোসেফ যে কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন সেই কোম্পানি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জামাই আলি সান্দ্র চিয়ারো মিনতে। ৯ মাস আগে বিয়ের জন্য বাংলাদেশি পাত্রীর সন্ধ্যান করলে আমার মেয়ের ছবি দেখান জোসেফ।

‘ছবি দেখে মেয়েকে পছন্দ হলে পরে মোবাইলে আমাদের মেয়ের সঙ্গে কথা বলা শুরু হয় জামাইয়ের। এরপর থেকে প্রায় ৯ মাস মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে সু-সম্পর্ক তৈরি হলে দুই পরিবারে সমাঝোতায় বিয়ের দিন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ভিসা এবং বাংলাদেশের আসার দিন তারিখ নির্ধারণ হলে আমরা নিজ বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করি।’ যোগ করেন তিনি।

রত্না রানীর ভাই রিপন দাস বলেন, মোবাইলে কথার একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা দুই পরিবারের মধ্যে গ্রহণ যোগ্যতা তৈরি করে। তাছাড়া বোনকে একজন ভালো পাত্রের নিকট পাত্রস্থ করতে পেরেও পরিবারের সকলেই স্বস্তি পাচ্ছি।

রত্না রানীর মা জানগি দাস বলেন, ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন এবং প্রতিবেশীদের নিয়ে মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করেছি। আমার জামাই আমার মেয়েকে নিয়ে ইতালিতে যাবে। পরবর্তীতে আমরাও পুরো পরিবার নিয়ে ইতালিতে যাব।

কনে রত্না রানী বলেন, কাকার কাছ থেকে ছবি দেখার পর মোবাইলে এবং ইমোতে যোগাযোগ করে কথা বলা শুরু হয়। একে অন্যের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্থাপন হয়। আমরা প্রায় ৯ মাস ধরে মোবাইলে কথা বলি। আমার চাচার শেখানো ইতালির ভাষা দিয়ে তার সঙ্গে আমি কথা বলি। তারপরে সোমবার আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। জামাই হিসেবে তিনি অনেক ভালো মনের মানুষ। তিনি সবকিছু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। বর্তমানে আমরা দুজনেই একে অপরের দেশের ভাষা শেখার চেষ্টা করছি।

আলি সান্দ্র চিয়ারো মিনতে জানান, দেশের একটি কোম্পানিতে রত্নার চাচার সাথে কাজ করি। কয়েক বছরের পরিচয়ে তাদের সুন্দর দাম্পত্য জীবন-যাপন দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে জোসেফকে বাংলাদেশে বিয়ে করার কথা বলি। এরপরে ছবি দেখে পাত্রি পছন্দ করে মোবাইলে কথা বলা, বাংলাদেশে এসে বিয়ে করা।

বালিয়াডাঙ্গীর চাড়োল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার চ্যাটার্জী বাবু বলেন, ইতালির ছেলেটির সাথে একই কোম্পানিতে খোকোপাড়া গ্রামের মেয়েটির চাচা কাজ করেন। সে ছেলের মাধ্যমেই দুজনের পরিচয় হয়। সে সূত্র ধরে বিয়ের মাধ্যমে প্রণয় ঘটে। এক সপ্তাহ থাকার পর ইতালির যুবক দেশের ফিরবেন। ভিসা-সংক্রান্ত কাজ শেষ করে মেয়েটিকে ইতালি নিয়ে যাবেন।

বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার্স ইনর্চাজ (ওসি) খায়রুল আনাম ডন বলেন, ইতালির যুবক এসে বিয়ে করেছেন। এটি স্থানীয় চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছেন। এখানে আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

 

ad

পাঠকের মতামত