362021

টোকিও চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছে নুহাশ হুমায়ূনের ‘মুভিং বাংলাদেশ’

আরমান হোসেন টুটুল ।।

টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (টিআইএফএফ) একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে চলচিত্রের বাজারকে বৈশ্বিকভাবে আরো সম্প্রসারণ করা। এরসঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মান প্রক্রিয়া ও বিপণনে জাপানসহ সারা বিশ্বের সৃজনশীল নির্মাতাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া। মূল চলচ্চিত্র উৎসবের পাশাপাশি ভিন্ন এই আয়োজন প্রতিবছরই চলে আসছে। সংক্ষেপে ‘টিফকম’ নামে এটি বেশি পরিচিত।

নতুন নতুন কনটেন্ট তৈরী করােই এই আয়োজনের একটি প্রধান কাজ । এই আয়োজনে বিভিন্ন দেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, চলচ্চিত্র নির্মাণসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, যেমন ছবির প্রযোজক, বিক্রয় এজেন্ট, বিতরণ ও বিনিয়োগ কোম্পানিসংশ্লিষ্ট লোকজন অংশ নিয়ে থাকেন। আয়োজনে আগত অতিথিরা চলচিত্রের ব্যবসায়িক দিক নিয়ে আলোচনা করেন। চলচ্চিত্রের নতুন নতুন বাজার তৈরীর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনোয়গ করার জন্য নানা সুযোগ দিয়ে থাকে।

গত বছর থেকে ছায়াছবির এই বাজারে নেওয়া হয়েছে নতুন একটি উদ্যোগ। তা হলো প্রতিযোগিতার জন্য সিনেমা নয়, বরং নির্মাণাধীন প্রকল্প জমা দেওয়া। যেসব প্রকল্প প্রতিযোগিতার জন্য জমা পড়ে, সেখান থেকে নির্বাচিত কিছু প্রজেক্টের জন্য কিছুটা অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া ছবির নির্মাতা ও পরিচালককে এশিয়ার কানখ্যাত টিফকমে অংশগ্রহণের জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানানো হয়। উৎসবের এই অংশ টোকিও গ্যাপ ফাইন্যান্সিং মার্কেট বা সংক্ষেপে টিজিএফএম নামে পরিচিত।

এ বছর ৩৪তম টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র(টিআইএফএফ) উৎসব ৩০ অক্টোবর ২০২১ শুরু হয়ে ৮ নভেম্বর ২০২১ শেষ হবে। আর টিজিএফএম অনুষ্ঠিত হবে ১ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

এবার টিজিএফএম প্রতিযোগিতার জন্য ৫৩টি দেশ থেকে মোট ৯৭টি প্রজেক্ট জমা পড়ে, তারমধ্যে ২০টি প্রকল্প অর্থায়নের জন্য বেছে নেওয়া হয়। এসব ছবির পরিচালক ও নির্মাতাকে উৎসব চলাকালে টোকিওতে আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচিত এসব নির্মাতাদের সম্ভাব্য বাজার খুঁজে পেতে উৎসব চলাকালে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ করে দেওয়া হবে।

টিজিএফএমের জন্য প্রজেক্ট জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আবেদনকারীদের পূরণ করতে হয়। মোট ব্যয়ের ৬০ শতাংশ ইতিমধ্যে নিশ্চিত হওয়া এবং নির্মাণাধীন সিনেমায় অবশ্যই এশিয়ার ছোঁয়া থাকতে হবে। এ বছরের বাছাই করা ২০টি প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি সম্পূর্ণ চলচিত্র, ৩টি অ্যানিমেশন চলচিত্র, ১টি টেলিভিশন সিরিজ ও ২টি টেলিভিশন অ্যানিমেশন ধারাবাহিক ।

১৪টি চলচিত্রের প্রকল্পের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া বাংলাদেশের একমাত্র ছবি হচ্ছে  নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পুত্র নুহাশ হুমায়ূন পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুভিং বাংলাদেশ’। ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘গুপী বাঘা প্রোডাকশনস হাউজ’। ফলে টোকিও চলচ্চিত্র উৎসব(টিআইএফএফ) চলাকালে জাপান সফরের আমন্ত্রণ পাচ্ছেন নুহাশ হুমায়ূন ও ছবির প্রযোজক।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য এটা নতুন এক দিগন্তের উন্মোচন। কারণ, প্রায় ৪০ বছরের পুরোনো এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে অভিজাত এই চলচ্চিত্র উৎসবের কোনো বিভাগেই বাংলাদেশ জায়গা করে নিতে পারেনি।

ফিল্ম এবং টেলিভিশন উৎপাদন ও বণ্টনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জাপানের অর্থনীতিকে বেগবান করেছে। ইতোমধ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১২৫ দশমিক ৮ ইউএস বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। জাপান ও আন্তর্জাতিক মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের (এমপিএ) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়।

ad

পাঠকের মতামত