355426

ঘুষের বিনিময়ে চাকরিতে যোগ দিতে এসে প্রাণটাই হারালেন সাগর

ডেস্ক রিপোর্ট : সরকারি চাকরি নামের সোনার হরিণের দেখা পেতে দিয়েছিলেন ৯ লাখ টাকা। কিন্তু তাতে যোগ দেয়ার আগেই লাশ হতে হলো জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হাটখোলা এলাকার নন্দইল গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাগর ইসলামকে (২৫)। জাগোনিউজ

একটি সরকারি মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক পদে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে গত ২৩ মার্চ তিনি বাড়ি থেকে রাজধানীর পথে রওনা হন। ২৫ মার্চ তার কর্মস্থলে যোগদানের কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বৈদ্যেরবাজার-বারদী সড়কের একটি সেতুর নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পকেটে থাকা মোবাইল ও সিমকার্ডের সূত্র ধরে তার পরিচয় বের করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ।

বিষয়টি জানানো হলে শুক্রবার (২ মার্চ) নিহতের পরিবার লাশ বুঝে নিতে নারায়ণগঞ্জে যায়।

সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ২৫ মার্চ অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত করে দাফন শেষে সেদিনই পুলিশ বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করে (মামলা নম্বর- ২৭)। দাফনের আগে নিহতের শার্টের পকেটে থাকা মোবাইল ও সিমকার্ডের সূত্র ধরে পরিচয় জানা যায়। বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) রাতে বিষয়টি জানানো হয় পাঁচবিবি থানা পুলিশকে।

নিহত সাগরের বাবা রশিদ বলেন, ‘পাঁচবিবি উপজেলার উচনা গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুর রউফের মাধ্যমে একই উপজেলার হরেন্দা গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে গোলাম রসুল মাস্টার, মোহাম্মদ মাস্টারের ছেলে আব্দুল আলিম ও জয়পুরহাট জননী লাইব্রেরীর রবির সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তারা আমার ছেলে সাগরকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৯ লাখ টাকায় চুক্তি করে। ছেলের চাকরির আশায় তাদেরকে ৭ লাখ টাকা দেয়া হয়। বাকি টাকা নিয়োগপত্র পাওয়ার দেয়া হবে বলে জানানো হয়।’

এরইমধ্যে গোলাম রসুল, আব্দুল আলীম ও রবি মোবাইল ফোনে রশিদকে জানান,তার ছেলের নিয়োগপত্র হয়েছে। তারা বাকি ২ লাখ টাকা নিয়ে ঢাকায় আসার জন্য বলেন। তাদের কথায় গত ২৩ মার্চ রশিদ ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় যান। পরদিন (২৪ মার্চ) রাজধানীর কালশী এলাকায় রশিদের হাতে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা ‘মহা-অধিদফতরসহ অঙ্গ বাহিনী সংস্থা সমূহের সাংগঠনিক কাঠামো ভূক্ত বিজ্ঞপ্তি স্মারক নং-২৩.১৭০০০০.০১.০৪.০৩৮.১৯.১৬২২’ অনুযায়ী সুপারিশক্রমে অফিস সহায়ক পদে গত ২৫ মার্চ যোগদানের জন্য একটি নিয়োগপত্র দেয়া হয়।

নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে বাকি ২ লাখ টাকা ওই ব্যক্তিদের হাতে তুলে দিয়ে ছেলেকে রেখে বাড়ি ফিরে যান রশিদ।
এদিকে, বাড়ি ফেরার পর ছেলের ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পান রশিদ। আলিমকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, ‘আপনার ছেলে ট্রেনিংয়ে আছে এজন্য ফোন বন্ধ।’

‘বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) রাতে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর দালাল আলিমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।’

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ দেব বলেন, ‘এ ব্যাপারে সোনাগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত দালালদের ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে, এরই মধ্যে আ. রউফ নামে এক দালালকে আটক করা হয়েছে।’ উৎস: জাগোনিউজ২৪ ও আমাদেরসময়.কম।

 

ad

পাঠকের মতামত