354458

প্রার্থী চূড়ান্তে মমতার চমক!

নিউজ ডেস্ক।। চমকের পরও যে চমক দেওয়া যায় সেটা আবারও প্রমাণ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের আগে পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকাই শুধু প্রকাশ করে নয় বরং প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার মুখেও ১১৪ জনকে নতুন প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৯১ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫০ জন যেমন রয়েছেন নারী প্রার্থী তেমন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রার্থী রয়েছেন ৪২ জন।

এসব চমকের বাইরে মমতার চমক রাজনীতিতে পা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিধায়ক পদে লড়ার সুযোগ করে দিয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা। শুধু তাই নয়, কলকাতার বাইরে (নন্দীগ্রামে) এই প্রথম নিজে লড়ার ঘোষণাও দিয়েছেন মমতা।

এছাড়াও ৫ জন মন্ত্রী ২৮ জন বিধায়ককে এবার প্রার্থী তালিকা থেকেই বাদ দিয়ে ঘরের বাইরে প্রবল চাপ সামলানোর চ্যালেঞ্জও গ্রহণ করেছেন মমতা।

শুক্রবার (০৫ মার্চ) দুপুরে নিজের বাড়ি কালীঘাটের দলীয় অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে করে প্রার্থী ঘোষণা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী। প্রার্থী তালিকায় ঘোষণার পরই যারা প্রার্থী হতে পারেননি তাদের বিক্ষোভ শুরু হয় রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায়।

প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন একাধিক নেতা-মন্ত্রী। বেশ কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, ভাঙচুর অবরোধ এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা।

শুক্রবার বিকেলে তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৯৪ আসনের বিধানসভার মধ্যে ৩টি আসন বন্ধু সহযোগিদের জন্য রেখে বাকি ২৯১ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।

পুরনো প্রায় ৫ মন্ত্রীসহ একাধিক শীর্ষ তৃণমূল নেতাকেও বাদ দিয়েছেন মমতা। পাশাপাশি একদম রাজনীতিতে নতুন আসা এমন ১২ জনকে প্রার্থী করেছেন মমতা।

সেই সাথে তার প্রার্থী তালিকায় সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রয়েছেন ৪২ জন, মহিলা প্রার্থী রয়েছেন ৫০ জন, আদিবাসী ১৭ জন এবং তফসিলি সম্প্রদায়ের ৪২ জন প্রতিনিধিকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বয়সের কারণে বাদ পড়েছেন অর্থনীতিবিদ ও মমতার অত্যন্ত আস্থাভাজন বর্তমান অর্থমন্ত্রী ড. অমিত মিত্র, কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। রাজ্জাক মোল্লা, রাত্না ঘোষ এবং বাচ্চু হাসদার মতো মন্ত্রীদের বাদ দিয়েছেন মমতা।

সেই সঙ্গে বেশ কয়েকজন বিধায়ক বাদ পড়েছেন প্রার্থী তালিকা থেকে। এর মধ্যে রয়েছেন সোনালী গুহ, আরাবুর ইসলাম, রফিকার রহমান। বাদের তালিকায় রয়েছেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ও।

প্রার্থী না করায় রফিকার রহমান, আরাবুল ইসলামের সমর্থকরা সন্ধ্যার পর থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বেশ কিছু এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এমনকী পথ অবরোধ ও গাড়ি ভাঙচুর করে।

তৃণমূল কংগ্রেসের এবারের প্রার্থী ঘোষণার পেছনে তিনটি ফ্যাক্টার কাজ করেছে। প্রথমকে তৃণমূল কংগ্রেসের নিযুক্ত ভোট কৌশলী সংস্থা আইপ্যাক বলা ভালো প্রশান্ত কিশোরের রিপোর্ট কার্ড, প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ।

গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ধাক্কা খাওয়ার পরই আইপ্যাক সংস্থাকে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের জনভিত্তি কেমন সেই পরিসংখ্যান বের করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সংস্থার দেওয়া রিপোর্ট দেখেই এবার প্রার্থী ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী।

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, ১৬০ বিধানসভার প্রার্থী বদল করেছেন মমতা। ১১৪ জন নতুন মুখ এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রার্থী ৪২ জন। নারী প্রার্থী ৫০ জন। আদিবাসী ১৯ জন। তফসিলি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রয়েছেন ৪২ জন।

ad

পাঠকের মতামত